পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় $9ዒ¢ “পথে ও পথের প্রান্তে গ্রন্থের ৩৯-সংখ্যক পত্রে তপতী নাটকটি সদ্য রচিত হইবার সংবাদ আছে । পত্রটির প্রাসঙ্গিক অংশ উদধূত হইল পুত্রসন্তান লাভ হলে সে সংবাদ খুব উৎসাহ করে প্রচার করা হয় । গতকল্য আমার লেখনী একটি সর্বাঙ্গসুন্দর নাটককে জন্ম দিয়েছে- দশমাস তার গর্ভবাস হয় নি- বোধ করি দিন-দশোকের বেশি সময় নেয় নি । ‘সর্বাঙ্গসুন্দর বিশেষণটা পড়ে হয়তো তোমার ওষ্ঠাধর হাস্যকুটিল হয়ে উঠবে । ওর মধ্যে একটুখানি সাইকলজির খেলা আছে । বাক্যটা যখন মনের মধ্যে রচিত হয়েছিল তখন কথাটা ছিল “সর্বাঙ্গসম্পূর্ণ কিন্তু যখন লেখা হল তখন দেখি, কথাটা বদলে গেছে । কেটে সংশোধন করা অসম্ভব ছিল না। কিন্তু ভেবে দেখলুম, যেটাকে সত্য বলে বিশ্বাস করি সেইটেই লেখা হয়ে গেছে। বিনয়টাকে তখনই সদগুণ বলতে রাজি আছি। যখন সেটা অসত্য নয় । -- নিজের লেখা খারাপ লাগতে যার বাধে না, এবং সেটাকে অকুষ্ঠিত ভাষায় স্বীকার করতে যার বেদনা নেই, নিজের লেখার প্রশংসা করা তার পক্ষে অহংকার নয় । অতএব খুব জোরের সঙ্গেই বলব, নাটকটা সর্বাঙ্গসুন্দর হয়েছে - যাক গে। বিষয়টা ছিল, আমার নতুন নাটক রচনা । রাজা ও রানীর রূপান্তরীকরণ । সেই নাম রইল ; সেই রূপ রইল না । বিশ্বভারতীর কর্মসচিবকে খাজনা দিতে হবে না। যদি সাবেক নামটার জন্যে ভাড়ার দাবি করেন। সেটাকে বদলাতে কতক্ষণ । ‘সুমিত্ৰা’ নামই ঠিক করেছি।” প্রশান্ত মাঝে মাঝে ইচ্ছা প্ৰকাশ করেছেন, যেন আমি নেড়াছন্দে ব্ল্যাঙ্কভার্সে নাটক লিখি । আমি স্পষ্টই দেখলুম, গদ্যে তার চেয়ে । ঢের বেশি জোর পাওয়া যায়। পদ্য জিনিসটা সমুদ্রের মতো, তার যা বৈচিত্ৰ্য তা প্ৰধানত তরঙ্গের ; কিন্তু, গদ্যটা স্থলদৃশ্য, তাতে নানা মেজাজের রূপ আনা যায়- অরণ্য, পাহাড়, মরুভূমি, সমতল, অসমতল, প্ৰান্তর, কান্তার ইত্যাদি ইত্যাদি ।- ২৩। শ্রাবণ ১৩৩৬ ১৩৩৮ সালের জ্যৈষ্ঠ মাসে “দ্বিতীয় সংস্করণে তপতী কিছু পরিবর্তিত আকারে প্রকাশিত” হয়। রচনাবলী-সংস্করণে সেই পরিবর্তিত শেষ পাঠ মুদ্রিত হইল । ভূমিকায় নাটকটি অভিনয়ের চেষ্টার যে উল্লেখ আছে সে অভিনয় কবির জোড়াসাকো বাড়িতে ১৯৩৬ সালে হইয়াছিল। বিক্রমের ভূমিকা রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং গ্রহণ কক্লিয়াছিলেন । নবীন ‘নবীন ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ফাঙ্গুন মাসে রচিত হয় । ঐ সালের চৈত্র মাসে কলিকাতায় নিউ এম্পায়ার থিয়েটারে উহা মঞ্চস্থ হইবার উপলক্ষে ঐ নামের গীতিনাটিকাটি পুস্তিকাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় । পরে ‘বনবাণী' গ্রন্থে (আশ্বিন ১৩৩৮) পরিবর্তিত আকারে “নবীন পুনরায় প্রকাশিত হয় । প্রধানত, অন্যত্র ব্যবহৃত পুরাতন গানগুলি ও তৎপ্রাসঙ্গিক কথাবস্তু এই ংস্করণে বৰ্জিত হয় । বর্তমান খণ্ডে ‘বনবাণী'র অন্তৰ্গত সেই শেষ পাঠই মুদ্রিত হইল । পুস্তিকাকারে প্রকাশিত প্ৰথম পাঠও পরিশিষ্ট্রে মুদ্রিত রহিল। শাপমোচন ‘শাপমোচন ১৩৩৮ বঙ্গাব্দের [ ১৯৩১ ] ১৫ পৌষ তারিখে ‘রবীন্দ্রজয়ন্তী ছাত্রছাত্রীউৎসব পরিষৎ কর্তৃক পুস্তিকাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় । ১৫ ও ১৬ পৌষ রাত্রে কবির জোড়াসাকো-ভবনে নৃত্যগীত ও পাঠ -সহযোগে ইহা প্ৰথম অভিনীত হইয়াছিল । ১. রবীন্দ্রভবনে-রক্ষিত একটি পাণ্ডুলিপিতেও নাটকটির নাম “সুমিত্রা রহিয়াছে। ২. প্রশান্তচন্দ্ৰ মহলানবিশ ।