পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী খাটুলি একলা হোথায় বসে আছে, কেই বা জানে ওকেআপন-ভোলা সহজ তৃপ্তি রয়েছে। ওর চোখে । খাটুলিটা বাইরে এনে আঙিনাটার কোণে টানছে তামাক বসে আপন-মনে । মাথার উপর বটের ছায়া, পিছন দিকে নদী বইছে নিরবধি । আয়োজনের বালাই নেইকো ঘরে, আমের কাঠের নড়ানড়ে এক তক্তপোষের পরে মাঝখানেতে আছে কেবল পাতা বিধবা তার মেয়ের হাতের সেলাই-করা কোথা । নাতনি গেছে, রাখে তারি পোষা ময়নাটাকে, তেমনি কচি গলায় ওকে ‘দাদু বলেই ডাকে । ছেলের গাথা ঘরের দেয়াল, চিহ্ন আছে তারি রঙিন মাটি দিয়ে আঁকা সিপাই সারি সারি । সেই ছেলেটাই তালুকদারের সর্দারি পদ পেয়ে GewORRICVS ANKO 95 WY KPKOVS GR3 ] দুঃখ অনেক পেয়েছে ও হয়তো ডুবছে দেনায়, হয়তো ক্ষতি হয়ে গেছে। তিসির বেচাকেনায় । বাইরে দারিদ্র্যের কাটা-ছেড়ার তীমাচড় লাগে ঢের, তবুও তার ভিতর-মনে দাগ পড়ে না বেশি, প্ৰাণটা যেমন কঠিন তেমনি কঠিন মাংসপেশী । হয়তো গোরু বেচিতে হবে মেয়ের বিয়ের দায়ে, মাসে দুবার ম্যালেরিয়া কাপন লাগায় গায়ে, ডাগর ছেলে চাকরি করতে গঙ্গাপারের দেশে হয়তো হঠাৎ মারা গেছে। ওই বছরের শেষেশুকনো করুণ চক্ষু দুটাে তুলে উপর-পানে কার খেলা এই দুঃখসুখের, কী ভাবলে সেই জানে ; বিচ্ছেদ নেই খাটুনিতে, শোকের পায় না ফাক, ভাবতে পারে স্পষ্ট করে নেইকো এমন বাক । কী বলবে যে কেমন ক’রে পায় না ভেবে শেষে । খাটুলিতে এসে বসে যখনি পায় ছুটি, ভাবনাগুলো ধোয়ায় মেলায়, ধোয়ায় ওঠে ফুটি । ওরা যে আছে খোলা আকাশ, ওর যে মাথার কাছে শিস দিয়ে যায় বুলবুলির আলোছায়ার নাচে,