পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিত্র n NY (t দূর নদীপারে শূন্ত শ্মশানে শৃগাল উঠিল ডাকি, . মাথার উপরে কেঁদে উড়ে গেল কোন নিশাচর পাখি । দেখিছু জুয়ারে রমণীমুৱতি অবগুণ্ঠনে ঢাকা— কৃষ্ণ অশ্বে বসিয়া রয়েছে, চিত্রে যেন সে জাক । আরেক অশ্ব দাড়ায়ে রয়েছে, পুচ্ছ ভূতল চুমে, ধূম্রবরন, যেন দেহ তার গঠিত শ্মশানধূমে। নড়িল না কিছু, আমারে কেবল হেরিল জাখির পাশে — শিহরি শিহরি সর্ব শরীর কাপিয়া উঠিল ত্ৰাসে। পাণ্ডু আকাশে খণ্ড চন্দ্র হিমানীর প্লানি মাখা, পল্লবহীন বৃদ্ধ অশথ শিহরে নয় শাখা । নীরব রমণী অঙ্গুলি তুলি দিল ইঙ্গিত করি – মন্ত্রমুখ অচেতনসম চড়িয় অশ্বপরি। বিদ্যুৎবেগে ছুটে যায় ঘোড়া – বারেক চাহিমু পিছে, ঘরদ্বার মোর বাষ্পসমান মনে হল সব মিছে। কাতর রোদন জাগিয়া উঠিল সকল হৃদয় বোপে, কণ্ঠের কাছে মুকঠিন বলে কে তারে ধরিল চেপে । পথের দুধারে রুদ্ধ দুয়ারে দাড়ায়ে সৌধসারি, ঘরে ঘরে হায় স্থখশষ্যায় ঘুমাইছে নরনারী । নির্জন পথ চিত্রিতবৎ, সাড়া নাই সারা দেশে— রাজার দুয়ারে দুইটি প্রহরী চুলিছে নিগ্রাবেশে । শুধু থেকে থেকে ডাকিছে কুকুর স্থদুর পথের মাঝে — গষ্ঠীর স্বরে প্রাসাদশিখরে প্রহরঘণ্টা বাজে। অফুরান পথ, অক্ষুরান রাতি, অজানা নূতন ঠাই— অপরূপ এক স্বপ্নসমান, অর্থ কিছুই নাই। . কী যে দেখেছিছু মনে নাহি পড়ে, ছিল নাকে আগাগোড় — লক্ষ্যবিহীন তীরের মতন ছুটিয়া চলেছে ঘোড়া । চরণে তাদের শব্দ বাজে না, উড়ে নাকে ধূলিরেখা – কঠিন ভূতল নাই যেন কোথা, সকলি বাম্পে লেখা।