পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী جه به দিখি । ও লাইনটা যদি এই রকম লেখা যায় তো কেমন হয়— ‘প্রেয়সীর করপয়ে অকুরক্ত সেবকের প্রণয়োপহার” । তিনকড়ি । বেশ হয়। _ অবিনাশ। বেশ হয়! একটা কথা বলে দিলেই হল— বেশ হয়’ ! একটু ভেবেচিন্তে বলে না ! তিনকড়ি ও বাবা! এ যে আবার রাগ করে! বুড়োর শরীরে কিন্তু রাগ নেই । ( প্রকাশ্বে ) ত, ভেবেচিন্তে দেখলে বোধ হয় গোড়ারটাই ছিল ভালো । অবিনাশ । কেন বলে দেখি । এটাতে কী দোষ হয়েছে । তিনকড়ি ও বাবা! এটাতে যদি দোষই না থাকবে তো খামক আমাকে ভাবতে বললে কেন ? এ তো বড়ো মুশকিলেই পড়া গেল দেখছি।– দোষ কী জানেন অবিনাশবাবু, ও ভাবতে গেলেই দোষ, না ভাবলে কিছুতেই দোষ নেই, আমি তো এই বুঝি। অবিনাশ। ও, বুঝেছি– তুমি বলছ, আগে থাকতে ঐ প্রেয়সী সম্বোধনটায় লোকে কিছু মনে ভাবতে পারে— তিনকড়ি। বাচা গেল ! — হা, তাই বটে। কিন্তু কী জানেন, আপনা-আপনির মধ্যে না হয় তাকে প্রেয়সীই বললেন । তা কি আর অন্য কেউ বলে না ! ওইটেই লিখে ফেলুন। অবিনাশ । কাজ নেই, গোড়ায় যেটা ছিল সেইটেই— তিনকড়ি । সেইটেই তো আমার পছন্দ– অবিনাশ । কিন্তু একটু ভেবে দেখো না, ওটা যেন— তিনকড়ি। ও বাবা! আবার ভাবতে বলে – দেখো অবিনাশবাবু, শিশুকাল থেকে আমিও কারও জন্যে ভাবিনি, অামার জন্যেও কেউ ভাবেনি, ওটা আমার আর অভ্যাস হলই না। এ রকম আরও আমার অনেকগুলি শিক্ষার দোষ আছে— অবিনাশ। আঃ, তিনকড়ি, তুমি একটু থামলে বাচি। নিজের কথা নিয়েই কেবল বক বক করে মরছ, আমাকে একটু ভাবতে দাও দেখি। * তিনকড়ি। আপনি ভাবুন না। আমাকে ভাবতে বলেন কেন ? একটু বস্থল অবিনাশবাবু, আমি কেদারদাকে ডেকে জানি। সে আমার চেয়ে ভাবতেও জানে, ভেবে কিনারা করতেও পারে – আমার পক্ষে বুড়োই ভালো । [ প্রস্থান