পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२8 ज्ञरौौटज-ब्रक्रमांवलौ জলখাবার ঠিক করে রাখিগে। আনন্দে উৎসাহে মার সঙ্গে পুরবালা ভাণ্ডার অভিমুখে প্রস্থান করিল। মুখুজ্যেমশায়ের সঙ্গে শৈলর তখন গোপন কমিটি বসিল। এই খালী-ভগিনীপতি ছুটি পরস্পরের পরম বন্ধু ছিল। অক্ষয়ের মত এবং রুচির দ্বারাই শৈলের স্বভাবটা গঠিত। অক্ষয় তাহার এই শিন্যাটিকে যেন আপনার প্রায় সমবয়স্ক ভাইটির মতো দেখিতেন— স্নেহের সহিত সৌহার্দ মিশ্রিত। তাহাকে খালীর মতো ঠাট্টা করিতেন বটে, কিন্তু তাহার প্রতি বন্ধুর মতো একটি সহজ শ্রদ্ধা ছিল। শৈল কহিল, “জার তো দেরি করা যায় না মুখুজোমশায়। এইবার তোমার সেই চিরকুমার-সভার বিপিনবাবু এবং শ্ৰীশবাবুকে বিশেষ একটু তাড়া না দিলে চলছে না। আহ, ছেলে দুটি চমৎকার। আমাদের নেপ আর নীরর সঙ্গে দিব্যি মানায়। তুমি তো চৈত্রমাস যেতে-না-যেতে আপিস ঘাড়ে করে সিমলে যাবে, এবারে মাকে ঠেকিয়ে রাখা শক্ত হবে।” অক্ষয়। কিন্তু তাই বলে সভাটিকে হঠাৎ অসময়ে তাড়া লাগালে যে চমকে যাবে। ডিমের খোলা ভেঙে ফেললেই কিছু পাখি বেরোয় না। যথোচিত তা দিতে হবে, তাতে সময় লাগে । শৈল একটুখানি চুপ করিয়া রহিল ; তার পরে হঠাৎ হাসিয়া বলিয়া উঠিল, “বেশ তো, তা দেবার ভার আমি নেব মুখুজোমশায় ।” অক্ষয় । আর একটু খোলসা করে বলতে হচ্ছে। শৈল । ওই তো দশ নম্বরে ওদের সভা ? অামাদের ছাদের উপর দিয়ে দেখনহাসির বাড়ি পেরিয়ে ওখানে ঠিক যাওয়া যাবে। আমি পুরুষবেশে ওদের সভার সভ্য হব, তার পরে সভা কতদিন টেকে আমি দেখে নেব । অক্ষয় নয়ন বিস্ফারিত করিয়া মুহূর্তকাল স্তম্ভিত থাকিয়া উচ্চহাস্ত করিয়া উঠিল। কহিল, “আহা, কী আপসোস যে, তোমার দিদিকে বিয়ে করে সভ্য নাম একেবারে জন্মের মতো ঘুচিয়েছি, নইলে দলবলে আমি স্থদ্ধ তো তোমার জালে জড়িয়ে চক্ষু বুজে মরে পড়ে থাকতুম। এমন স্বখের ফাড়াও কাটে। সখী, তবে মনোযোগ দিয়ে শোনো (সিন্ধুভৈরবীতে গান )— ওগো হৃদয়-বনের শিকারি । মিছে তারে জালে ধরা যে তোমারি ভিখারি ; সহস্রবার পায়ের কাছে আপনি যে জন মরে অাছে, নয়নবাণের খোচা খেতে সে যে অনধিকারী।”