পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩২ ब्ररौञ्ज-ब्रळ्नावलौ এমন সময় চাকর আসিয়া খবর দিল, দুটি বাৰু আসিয়াছে। শৈল কহিল, “ওই বুঝি তারা এল। দিদি আর মা ভাড়ারে ব্যস্ত আছেন, তাদের অবকাশ হবার পূর্বেই ওদের কোনো মতে বিদায় করে দিয়ে।” অক্ষয় জিজ্ঞাসা করিলেন, “কী বকশিশ মিলবে ?” শৈল কহিল, “আমরা তোমার সব শালীর মিলে তোমাকে শালীবাহন রাজা খেতাব দেব ।” অক্ষয় । শালীবাহন দি সেকেণ্ড ? শৈল। সেকেও হতে যাবে কেন ? সে শালীবাহনের নাম ইতিহাস থেকে একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তুমি হবে শালীবাহন দি গ্রেট । অক্ষয় । বল কী ? অামার রাজ্যকাল থেকে জগতে নূতন সাল প্রচলিত হবে ? এই বলিয়া অত্যস্ত সাড়ম্বর তান-সহকারে ভৈরবীতে গান ধরিলেন তুমি আমায় করবে মস্ত লোক ! দেবে লিখে রাজার টিকে প্রসন্ন ঐ চোখ ! শৈলবালার প্রস্থান। ভৃত্য আদিষ্ট হইয়া দুটি ভদ্রলোককে উপস্থিত করিল। একটি বিসদৃশ লম্ব, রোগ, বুট-জুতা পর, ধুতি প্রায় হাটুর কাছে উঠিয়াছে, চোখের নীচে কালী-পড়া, ম্যালেরিয়া রোগীর চেহারা— বয়স বাইশ হইতে বত্রিশ পর্যন্ত যেটা খুশি হইতে পারে। আর একটি বেঁটেখাটো, অত্যন্ত দাড়ি-গোফ-সংকুল, নাকটি বটিককার, কপালটি টিবি, কালোকোলো, গোলগাল । অক্ষয় অত্যস্ত সৌহার্দসহকারে উঠিয়া অগ্রসর হইয়া প্রবল বেগে শেকহ্যাও করিয়া দুটি ভদ্রলোকের হাত প্রায় ছিড়িয়া ফেলিলেন। বলিলেন, “আম্বন মিস্টার হ্যাথানিয়াল, আস্থন মিস্টার জেরেমায়া, বস্থন বহন । ওরে বরফ-জল নিয়ে আয় রে, তামাক দে!” রোগ লোকটি সহসা বিজাতীয় সম্ভাষণে সংকুচিত হইয়া মৃদুস্বরে বলিল, “জাজে, আমার নাম মৃত্যুঞ্জয় গাঙ্গুলি।” বেঁটে লোকটি বলিল, “আমার নাম শ্ৰদারুকেশ্বর মুখোপাধ্যায়।” অক্ষয়। ছি মশায় ! ও নামগুলো এখনও ব্যবহার করেন বুঝি ? আপনাদের ক্রিশচান নাম ? আগন্তুকদিগকে হতবুদ্ধি নিরুত্তর দেখিয়া কহিলেন, “এখনও বুঝি নামকরণ হয় নি? তা, তাতে বিশেষ কিছু অালে যায় না, ঢের সময় আছে।” বলিয়া নিজের গুড়গুড়ির নল মৃত্যুঞ্জয়ের হাতে অগ্রসর করিয়া দিলেন। সে লোকট