পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রজাপতির নির্বন্ধ ર 88 অক্ষয় । উনিই হচ্ছেন স্বয়ং আগুন । রসিক। এক ব্যক্তি ওঁকে লেজে করে নিয়ে যাবেন। পুরবাল । আমি কিছু বুঝতে পারছিনে। শৈল, তুই চিরকুমার-সভায় ষাবি নাকি । শৈল। আমি ষে সভ্য হব। পুরবালা। কী বলিস তার ঠিক নেই! মেয়েমানুষ আবার সভ্য হবে কী ! শৈল। আজকাল মেয়েরাও যে সভ্য হয়ে উঠেছে। তাই আমি শাড়ি ছেড়ে চাপকান ধরব ঠিক করেছি। পুরবালা। বুঝেছি, ছদ্মবেশে সভ্য হতে যাচ্ছিস বুঝি। চুলটা তো কেটেইছিল, ওইটেই বাকি ছিল। তোমাদের যা খুশি করে, আমি এর মধ্যে নেই। অক্ষয়। না না, তুমি এ দলে ভিড়ে না! আর যার খুশি পুরুষ হোক, আমার অদৃষ্টে তুমি চিরদিন মেয়েই থেকো— নইলে ব্রীচ অফ কনট্রাকৃচ্‌— সে বড়ো ভয়ানক মকদ্দমা ! —বলিয়া সিন্ধুতে গান ধরিলেন— চির-পুরানো চাদ ! চিরদিবস এমনি থেকে আমার এই সাধ । পুরানো হাসি পুরানো স্বধা, মিটায় মম পুরানো ক্ষুধা— নূতন কোনে চকোর যেন পায় না পরসাদ ! পুরবালা রাগ করিয়া চলিয়া গেল। অক্ষয় শৈলবালাকে আশ্বাস দিয়া কহিলেন, “ভয় নেই। রাগটা হয়ে গেলেই মনটা পরিষ্কার হবে— একটু অনুতাপও হবে— সেইটেই স্বযোগের সময় ।” । রসিক । “কোপো যত্র ভ্রুকুটিরচনা নিগ্ৰহ ষত্র মৌনং । যত্রান্তোন্তস্মিতমন্থনয়ং যত্র দৃষ্টি: প্রসাদ । শৈল। রসিকদাদা, তুমি তো দিব্যি শ্লোক আউড়ে চলেছ—কোপ জিনিসটা কী, তা মুখুজ্যেমশায় টের পাবেন। রসিক। আরে ভাই, বদল করতে রাজি আছি। মুখুজোমশায় যদি শ্লোক আওড়াতেন আর আমার উপরেই যদি কোপ পড়ত তা হলে এই পোড়া কপালকে সোনা দিয়ে বাধিয়ে রাখতুম। কিন্তু দিদি, ওই জলখাবারের থালা দুটি তো মান করেনি, বসে গেলে বোধ হয় আপত্তি নেই ? d অক্ষয়। ঠিক ওই কথাটাই ভাবছিলুম। উভয়ে আহারে উপবেশন করিলেন, শৈলবালা পাখা লইয়া বাতাস করিতে লাগিলেন। .