পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२8२ রবীন্দ্র-রচনাৰলী চতুর্থ পরিচ্ছেদ আহারের পর শৈলবালা ডাকিল, "মুখুজোমশায়।” অক্ষয় অত্যন্ত ত্রস্তভাব দেখাইয়া কহিলেন, “আবার মুখুজোমশায় ! এই বালখিল্য মুনিদের ধ্যানভঙ্গ-ব্যাপারের মধ্যে আমি নেই।” * শৈলবালা। ধ্যানভঙ্গ আমরা করব। কেবল মুনিকুমারগুলিকে এই বাড়িতে আন৷ চাই। অক্ষয় চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া কহিলেন, “সভাস্বদ্ধ এইখানে উৎপাটিত করে আনতে হবে। যত দুঃসাধ্য কাজ সবই এই একটিমাত্র মুখুজ্যেমশায়কে দিয়ে ?” শৈলবালা হাসিয়া কহিল, “মহাবীর হবার ওই তো মুশকিল। যখন গন্ধমাদনের প্রয়োজন হয়েছিল তখন নল নীল অঙ্গদকে তো কেউ পোছেওনি !” অক্ষয় গর্জন করিয়া কহিলেন, “ওরে পোড়ারমুখী, ত্রেতাযুগের পোড়ারমুখোকে ছাড়া আর কোনো উপমাও তোর মনে উদয় হল না ? এত প্রেম !” শৈলবালা কহিল, “ই গো, এতই প্রেম !” অক্ষয় ভৈরোতে গাহিয়া উঠিলেন— “পোড়া মনে শুধু পোড়া মুখখানি জাগে রে । এত আছে লোক, তবু পোড়া চোখে আর কেহ নাহি লাগে রে ! আচ্ছ, তাই হবে । পঙ্গপাল কটাকে শিখার কাছে তাড়িয়ে নিয়ে আসব। তাহলে চট্ট করে আমাকে একটা পান এনে দাও । তোমার স্বহস্তের রচনা !” শৈল। কেন দিদির হস্তের— অক্ষয়। আরে, দিদির হস্ত তো জোগাড় করেইছি, নইলে পাণিগ্রহণ কী জন্তে ? এখন অন্য পদ্মহস্তগুলির প্রতি দৃষ্টি দেবার অবকাশ পাওয়া গেছে। পোড়ার মুখ আবার পুড়বে। অক্ষয় গাহিলেন— “যারে মরণ দশায় ধরে সে যে শতবার করে মরে । পোড়া পতঙ্গ যত পোড়ে তত