পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अबाणच्द्रि नििर्दक २¢¢ মনে করিলেন। পুরবালার প্রতি তাহার বড়ে নির্ভর। সে তাহার সঙ্গে যাইতেছে বলিয়া তিনি নিশ্চিভ আছেন। পুরবাল স্বামীর সঙ্গে সিমলা বাতায়াত করিয়া বিদেশভ্রমণে পাকা হইয়াছে; পুরুষ-অভিভাবকের অপেক্ষা পুরবালাকেই তিনি পথসংকটে সহায়রূপে আশ্রয় করিয়াছেন। হঠাৎ তাহার অসন্মতিতে বিপন্ন হইয়া জগত্তারিণী তাহার জামাতার মুখের দিকে চাহিলেন। অক্ষয় তাহার শাশুড়ীর মনের ভাব বুঝিয়া কহিলেন, “সে কি হয় ? তুমি মার সঙ্গে না গেলে ওঁর অস্থবিধা হবে। আচ্ছ মা, তুমি এগোও, আমি ওকে ঠিক সময়ে স্টেশনে নিয়ে যাব।” জগত্তারিণী নিশ্চিন্তু হইয়া প্রস্থান করিলেন। রসিকদাদা টাকে হাত বুলাইতে বুলাইতে বিদায়কালীন বিমৰ্ষত মুখে আনিবার জন্য চেষ্টা করিতে লাগিলেন । অক্ষয় । কে মশায় । আপনি কে ? “আজো মশায়, আপনার সহধর্মিণীর সঙ্গে আমার বিশেষ সম্বন্ধ আছে”— বলিয়া পুরুষবেশধারী শৈল অক্ষয়ের সঙ্গে শেক্-হাও, করিল। শৈল। মুখুজোমশায় চিনতে তো পারলে না ? পুরবালা। অবাক করলি ! লাজ করছে না ? শৈল। দিদি, লজ্জা যে স্ত্রীলোকের ভূষণ— পুরুষের বেশ ধরতে গেলেই সেটা পরিত্যাগ করতে হয়। তেমনি আবার মুখুজোমশায় যদি মেয়ে সাজেন, উনি লজ্জায় মুখ দেখাতে পারবেন না। রসিকদাদা, চুপ করে রইলে যে ! রসিক। জাহ শৈল ! যেন কিশোর কন্দৰ্প । যেন সাক্ষাৎ কুমার, ভবানীর কোল থেকে উঠে এল । ওকে বরাবর শৈল বলে দেখে আসছি, চোখের অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল— ও সুন্দরী কি মাঝারি, কি চলনসই, সে কথা কখনো মনেও ওঠেনি— আজ ওই বেশটি বদল করেছে বলেই তো ওর রূপখানি ধরা দিলে । পুরোদিদি, লজ্জার কথা কী বলছিল, আমার ইচ্ছে করছে ওকে টেনে নিয়ে ওর মাথায় হাত দিয়ে আশীৰ্বাদ করি! 寧 পুরবালা শৈলের তরুণ স্বকুমার প্রিয়দর্শন পুরুষমূর্তিতে মনে মনে মুখ হইতেছিল। গভীর বেদনার সহিত তাহার কেবলই মনে হইতেছিল, জাহ শৈল আমাদের বোন না হয়ে যদি ভাই হত । ওর এমন রূপ এমন বুদ্ধি ভগবান সমস্তই ব্যর্থ করে দিলেন! পুরবালায় ক্ষিপ্ত চোখ দুইটি ছলছল করিয়া উঠিল। o অক্ষয় স্নেহাভিষিক্ত গভীর্ষের সহিত ছদ্মবেশিনীকে ক্ষণকাল নিরীক্ষণ করিয়া