পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রজাপতির নির্বন্ধ ২৬৩ ব্যাঙ্ক খুলে বড়ে বড়ে পল্লীতে নূতন নিয়মে এক-একটা দোকান বসিয়ে আসবে— ভারতবর্ষের চারি দিকে বাণিজ্যের জাল বিস্তার করে দেবে। তিনি খুব মেতেউঠেছেন। পূর্ণ। ৰিপিনবাৰুর কী মত? বিপিনের মতে ঐশের এই কল্পনাটি কার্বসাধ্য নয় ; কিন্তু ঐশের সর্বপ্রকার পাগলামিকে সে স্নেহের চক্ষে দেখিত, প্রতিবাদ করিয়া প্রশের উৎসাহে আঘাত দিতে তাহার কোনোমতেই মন সরিত না। সে বলিল, “যদিচ আমি নিজেকে ঐশের নবীন সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের আদর্শ পুরুষ বলে জ্ঞান করিনে, কিন্তু দল যদি গড়ে ওঠে তো আমিও সন্ন্যাসী সাজতে রাজি আছি।” পূর্ণ। কিন্তু সাজতে খরচ আছে মশায়। কেবল কৌপীন নয় তো— অঙ্গদ, কুগুল, আভরণ, কুন্তলীন, দেলখোস— ঐশ। পূর্ণবাবু, ঠাটাই কর আর যাই কর, চিরকুমার-সভা সন্ন্যাসীসভা হবেই। আমরা এক দিকে কঠোর আত্মত্যাগ করব, অন্ত দিকে মকুন্তত্বের কোনো উপকরণ থেকে নিজেদের বঞ্চিত করব না। আমরা কঠিন শৌর্ধ এবং ললিত সৌন্দর্ধ উভয়কেই সমান আদরে বরণ করব। সেই দুরূহ সাধনায় ভারতবর্ষে নবযুগের আবির্ভাব হবে— পূর্ণ। বুঝেছি ঐশবাৰু! কিন্তু নারী কি মহন্তত্বের একটা সর্বপ্রধান উপকরণের মধ্যে গণ্য নয় ? এবং তাকে উপেক্ষা করলে ললিত সৌন্দর্যের প্রতি কি সমাদর রক্ষা হবে ? তার কী উপায় করলে ? শ্ৰীশ । নারীর একটা দোষ নরজাতিকে তিনি লতার মতো বেষ্টন করে ধরেন, যদি র্তার দ্বারা বিজড়িত হবার আশঙ্কা না থাকত, যদি তাকে রক্ষা করেও স্বাধীনতা রক্ষা করা যেত, তা হলে কোনো কথা ছিল না। কাজে যখন জীবন উৎসর্গ করতে হবে তখন কাজের সমস্ত বাধা দূর করতে চাই। পাণিগ্রহণ করে ফেললে নিজের পাণিকেও বদ্ধ করে ফেলতে হবে, সে হলে চলবে না পূর্ণবাৰু! পূর্ণ। ব্যস্ত হোয়ে না ভাই, আমি আমার শুভবিবাহে তোমাদের নিমন্ত্রণ করতে আসিনি। কিন্তু ভেবে দেখো দেখি, মচুন্যজন্ম আর পাৰ কি না সন্দেহ– অথচ হয়েকে চিরজীবন যে পিপাসার জল থেকে বঞ্চিত করতে ৰাচ্ছি তার পূরণস্বরূপ আর কোথাও আর কিছু জুটবে কি ? মুসলমানের স্বর্গে ছরি অাছে, হিন্দুর স্বর্গেও অঙ্গরার অভাব নেই, চিরকুমার-সভার স্বর্গে সভাপতি এবং সত্যমশারদের চেয়ে মনোরম আর কিছু পাওয়া যাবে কি ! . ঐশ। পূৰ্ণবাবু বল কী ? তুমি ৰে—