পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ર૭8 রবীন্দ্র-রচনাবলী পূর্ণ। ভয় নেই ভাই, এখনও মরিয়া হয়ে উঠিনি। তোমার এই ছাদ-ভরা জ্যোৎস্না আর ওই ফুলের গন্ধ কি কৌমাৰ্যব্রতরক্ষার সহায়তা করবার জন্তে স্বষ্টি হয়েছে? মনের মধ্যে মাঝে মাঝে যে বাষ্প জমে আমি সেটাকে উচ্ছ্বসিত করে দেওয়াই ভালো বোধ করি, চেপে রেখে নিজেকে ভোলাতে গেলে কোন দিন চিরকুমারত্রতের লোহার বয়লারখানা ফেটে যাবে। যাই হোক, যদি সন্ন্যাসী হওয়াই স্থির কর তে আমিও যোগ দেব, কিন্তু আপাতত সভাটাকে তে রক্ষা করতে হবে । শ্ৰীশ । কেন ? কী হয়েছে ? পূর্ণ। অক্ষয়বাবু আমাদের সভাকে যে স্থানান্তর করবার ব্যবস্থা করছেন এটা আমার ভালো ঠেকছে না । শ্ৰীশ। সন্দেহ জিনিসটা নাস্তিকতার ছায়া। মন্দ হবে, ভেঙে যাবে, নষ্ট হবে, এসব ভাব আমি কোনো অবস্থাতেই মনে স্থান দিইনে। ভালোই হবে, যা হচ্ছে বেশ হচ্ছে— চিরকুমার-সভার উদার বিস্তীর্ণ ভবিষ্যৎ আমি চোখের সম্মুখে দেখতে পাচ্ছি-- অক্ষয়বাবু সভাকে এক বাড়ি থেকে অন্ত বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে তার কী অনিষ্ট করতে পারেন ? কেবল গলির এক নম্বর থেকে আর-এক নম্বরে নয়, আমাদের যে পথে পথে দেশে দেশে সঞ্চরণ করে বেড়াতে হবে। সন্দেহ শঙ্কা উদবেগ এগুলো মন থেকে দূর করে দাও পূর্ণবাবু বিশ্বাস এবং আনন্দ না হলে বড়ে কাজ হয় না। পূর্ণ নিরুত্তর হইয়া বসিয়া রহিল। বিপিন কহিল, “দিনকতক দেখাই যাক-না, যদি কোনো অসুবিধার কারণ ঘটে তা হলে স্বস্থানে ফিরে আসা যাবে ; আমাদের সেই অন্ধকার বিবরটি ফস্ করে কেউ কেড়ে নিচ্ছে না।” হায়, পূর্ণের হৃদয়বেদন কে বুঝিবে ? অকস্মাৎ চন্দ্রমাধববাবুর সবেগে প্রবেশ তিন জনের সসন্ত্রমে উত্থান চন্দ্র। দেখে, আমি সেই কথাটা ভাবছিলুম— শ্ৰীশ । বসুন। 曾 চন্দ্র। না না, বসব না, আমি এখনই যাচ্ছি। আমি বলছিলুম, সন্ন্যাসত্রতের জন্তে আমাদের এখন থেকে প্রস্তুত হতে হবে। হঠাৎ একটা অপঘাত ঘটলে, কিম্বা সাধারণ জরজালায়, কিরকম চিকিৎসা সে আমাদের শিক্ষা করতে হবে— ডাক্তার রামরতনবাৰু ফি রবিবারে আমাদের দু ঘণ্টা করে বক্তৃতা দেবেন বন্দোবস্ত করে এসেছি। ঐশ। কিন্তু তাতে অনেক বিলম্ব হবে না ?