পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀՊՀ ब्ररीौटल-ब्रळनांयलौ হঠাৎ পূৰ্ণবাবুর উৎসাহ অনেকটা নামিয়া গেল। নির্মলার নাম করিয়া সকলের কাছে আলোচনা উত্থাপন তাহার কাছে রুচিকর বোধ হইল না। সে কিছু কুষ্ঠিতম্বরে কহিল, “সে বেশ কথা, কিন্তু এ দিকে দেরি হয়ে যাচ্ছে না ?” চন্দ্র। না, এখনো সময় আছে। শ্ৰীশবাবু, তোমরা একটু বোসো-না, কথাটা একটু স্থির হয়ে ভেবে দেখবার যোগ্য। আমার একটি ভাগ্নী আছেন, তার নাম নির্মলা— পূর্ণ হঠাৎ কাসিয়া লাল হইয়া উঠিল। ভাবিল চন্দ্রবাবুর কাওজানমাত্রই নাই— পৃথিবীর লোকের কাছে নিজের ভাগ্নীর পরিচয় দিবার কী দরকার— অনায়াসে নির্মলাকে বাদ দিয়া কথাটা আলোচনা করা যাইতে পারে। কিন্তু কোনো কথার কোনো অংশ বাদ দিয়া বলা চক্রবাবুর স্বভাব নহে। চন্দ্র। আমাদের কুমারসভার সমস্ত উদ্দেশ্বের সঙ্গে তার একান্ত মনের মিল। এত বড়ো একটা খবর শ্ৰীশ এবং বিপিন অবিচলিত নিরুৎস্থক ভাবে শুনিয়া যাইতে লাগিল। পূর্ণ কেবলই ভাবিতে লাগিল, নির্মলার প্রসঙ্গ সম্বন্ধে যাহারা জড় পাষাণের মতো উদাসীন, নির্মলাকে যাহারা পৃথিবীর সাধারণ স্ত্রীলোকের সহিত পৃথক করিয়া দেখে না, তাহদের কাছে সে নামের উল্লেখ করা কেন ? চন্দ্র। এ কথা আমি নিশ্চয় বলতে পারি, তার উৎসাহ আমাদের কারো চেয়ে কম নয় । ঐশ ও বিপিনের কাছ হইতে সাড়া না পাইয়া চন্দ্রবাবুও বোধ করি মনে মনে একটু উত্তেজিত হইতেছিলেন। চন্দ্র । এ কথা আমি ভালোরূপ বিবেচনা করে দেখে স্থির করেছি, স্ত্রীলোকের উৎসাহ পুরুষের সমস্ত বৃহৎ কার্যের মহৎ অবলম্বন । কী বল পূর্ণবাবু! S পূর্ণবাবুর কোনো কথা বলিবার ইচ্ছাই ছিল না ; কিন্তু নিস্তেজভাবে বলিল, “তা তো বটেই।” চন্দ্রবাবুর পালে কোনো দিক হইতে কোনো হাওয়া লাগিল না দেখিয়া হঠাৎ সবেগে ঝিকা মারিয়া বলিয়া উঠিলেন, “নির্মলা যদি কুমারসভার সভ্য হবার জন্ত প্রার্থী থাকে তা হলে তাকে আমরা সভ্য না করব কেন ?” পূর্ণ তো একেবারে বজাহতবং । বলিয়া উঠিল, “বলেন কী চক্রবাৰু ?” ঐশ পূর্ণর মতো অত্যুগ্র বিস্ময় প্রকাশ না করিয়া কহিল, “আমরা কখনো কল্পনা করি নি যে, কোনো স্ত্রীলোক আমাদের সভার সভ্য হতে ইচ্ছা প্রকাশ করবেন, সুতরাং এ সম্বন্ধে আমাদের কোনো নিয়ম নেই—” ন্যায়পরায়ণ বিপিন গম্ভীরকণ্ঠে কহিল, *নিষেধও নেই।”