পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী واسطه চক্রবাবুর পাতে আম ছিল, তিনি সেটাকে ভালোরূপ আয়ত্ত করিতে পারিতেছিলেন না— অনুতপ্ত শৈল তাড়াতাড়ি তাহা কাটিয়া সহজসাধ্য করিয়া দিল। যে সময়ে যেটি আবশ্যক সেটি অস্তে আস্তে হাতের কাছে জোগাইয়া দিয়া তাহার ভোজনব্যাপারটি নির্বিত্ন করিতে লাগিল । চন্দ্র। শ্ৰীশবাবু, স্ত্রী-সভ্য নেওয়া সম্বন্ধে আপনি কিছু বিবেচনা করেছেন ? শ্ৰীশ । ভেবে দেখতে গেলে ওতে আপত্তির কারণ বিশেষ নেই, কেবল সমাজের আপত্তির কথাটা আমি ভাবি । বিপিনের তর্কপ্রবৃত্তি চড়িয়া উঠিল। কহিল, “সমাজকে অনেক সময় শিশুর মতে গণ্য করা উচিত। শিশুর সমস্ত আপত্তি মেনে চললে শিশুর উন্নতি হয় না, সমাজ সম্বন্ধেও ঠিক সেই কথা খাটে।” আজ ঐশ উপস্থিত প্রস্তাবটা সম্বন্ধে অনেকট নরমভাবে ছিল, নতুবা উত্তাপ হইতে বাষ্প ও বাষ্প হইতে বৃষ্টির মতো এই তর্ক হইতে কলহ ও কলহ হইতে পুনর্বার সম্ভাবের স্বষ্টি হইত। এমন-কি, শ্ৰীশ কথঞ্চিৎ উৎসাহের সহিত বলিল, “আমার বোধ হয় আমাদের দেশে যে এত সভাসমিতি আয়োজন-অনুষ্ঠান অকালে ব্যর্থ হয় তার প্রধান কারণ, সে-সকল কার্ধে স্ত্রীলোকদের যোগ নেই। রসিকবাবু কী বলেন ?” রসিক। অবস্থাগতিকে যদিও স্ত্রীজাতির সঙ্গে আমার বিশেষ সম্বন্ধ নেই তৰু এটুকু জেনেছি, স্ত্রীজাতি হয় যোগ দেন নয় বাধা দেন, হয় স্বষ্টি নয় প্রলয়। অতএব ওঁদের দলে টেনে অন্য স্থবিধা যদি বা নাও হয় তবু বাধার হাত এড়ানো যায়। বিবেচনা করে দেখুন, চিরকুমার-সভার মধ্যে যদি স্ত্রীজাতিকে আপনার গ্রহণ করতেন তা হলে গোপনে এই সভাটিকে নষ্ট করবার জন্তে ওঁদের উৎসাহ থাকত না, কিন্তু বর্তমান অবস্থায়— শৈল। কুমারসভার উপর স্ত্রীজাতির আক্রোশের খবর রসিকদাদা কোথায় পেলে ? রসিক। বিপদের খবর না পেলে কি আর সাবধান করতে নেই? একচক্ষু হরিণ যে দিকে কানা ছিল সেই দিক থেকেই তো তীর খেয়েছিল। কুমারসভা যদি স্ত্রীজাতির প্রতিই কানা হন তা হলে সেই দিক থেকেই হঠাৎ ঘা থাকেন। শ্ৰীশ । (বিপিনের প্রতি মৃদুস্বরে ) একচক্ষু হরিণ তো আজ একটা তীর খেয়েছেন, একটি সভ্য ধূলিশায়ী। # চন্দ্র। কেবল পুরুষ নিয়ে যারা সমাজের ভালো করতে চায় তারা এক পায়ে