পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

鼻 রবীন্দ্র-রচনাবলী هه جث অক্ষয় । ( ব্যস্তসমস্ত ) না না, ওটা নিয়ে গোল করিস নে, আহ, দিয়ে যা— নৃপবালা । নীরু ভাই, জালাস নে, চিঠিখানা ওঁকে ফিরিয়ে দে, ওখানে গুগলীর উপত্ৰৰ সয় না।— কিন্তু মুখুজোমশায়, তুমি দিদিকে চিঠিতে কী বলে সম্বোধন কর বলো-না ! অক্ষয়। রোজ নূতন সম্বোধন করে থাকি— নৃপবালা। আজ কী করেছ বলে দেখি । অক্ষয়। শুনবে ? তবে সখী, শোনে। চঞ্চলচকিতচিত্তচকোরচৌরচঞ্চুচুম্বিতচারচন্দ্রিকরুচিরুচির চিরচন্দ্ৰমা । নীরবালা। চমৎকার চাটুচাতুর্থ ! অক্ষয়। এর মধ্যে চৌর্যবৃত্তি নেই, চর্বিতচর্বণশূন্ত । নৃপবালা। (সবিস্ময়ে) আচ্ছ মুখুজোমশায়, রোজ রোজ তুমি এই রকম লম্বা লম্ব সম্বোধন রচনা কর ? তাই বুঝি দিদিকে চিঠি লিখতে এত দেরি হয় ? অক্ষয়। ওই জন্তেই তো নৃপর কাছে আমার মিথ্যে কথা চলে না। ভগবান ষে আমাকে সদ্য সদ্য বানিয়ে বলবার এমন অসাধারণ ক্ষমতা দিয়েছেন সেটা দেখছি খাটাতে দিলে না। ভগ্নীপতির কথা বেদবাক্য বলে বিশ্বাস করতে কোন মনুসংহিতায় লিখেছে বল দেখি ? নীরবালা। রাগ কোরো না, শাস্ত হও মুখুজ্যেমশায়, শাস্ত হও । সেজদিদির কথা ছেড়ে দাও, কিন্তু ভেবে দেখো, আমি তোমার আধখানা কথা সিকি পয়সাও বিশ্বাস করি নে— এতেও তুমি সাত্বনা পাও না ? নৃপবালা। আচ্ছ মুখুজোমশায়, সত্যি করে বলে, দিদির নামে তুমি কখনো কবিতা রচনা করেছ ? অক্ষয়। এবার তিনি যখন অত্যন্ত রাগ করেছিলেন তখন তার স্তব রচনা করে। গান করেছিলুম— নৃপবালা । তার পরে ? অক্ষয়। তার পরে দেখলুম, তাতে উলটো ফল হল, বাতাস পেয়ে যেমন আগুন বেড়ে ওঠে তেমনি হল । সেই অবধি স্তবরচনা ছেড়েই দিয়েছি। নৃপবালা। ছেড়ে দিয়ে কেবল গয়লাবাড়ির হিসেব লিখছ ! কী স্তব লিখেছিলে মুখুজোমশায়, আমাদের শোনাও-না। অক্ষয়। সাহস হয় না, শেষকালে আমার উপরওয়ালার কাছে রিপোর্ট, করৰি । নৃপবাল। না, আমরা দিদিকে বলে দেব না। • ,