পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९>8 রবীন্দ্র-রচনাবলী তাহারে করিব সেবা, কবে হবে হায়, কিসলয়-পাখাখানি দোলাইব গায় ? ঐশ। বা, বা, রসিকবাবু, আপনার মধ্যে এত আছে তা তো জানতুম না। । রসিক। কী করে জানবেন বলুন। কাব্যলক্ষ্মী যে তার পদ্মবন থেকে মাঝে মাঝে এই টাকের উপরে খোলা হাওয়া খেতে আসেন এ কেউ সন্দেহ করে না । (হাত বুলাইয়া ) কিন্তু এমন ফাকা জায়গা আর নেই! শ্ৰীশ । আহাহা রসিকবাবু, যমুনাতীরে সেই স্নিগ্ধ অলিন্দওয়াল কুঞ্চকুটিরটি আমার ভারি মনে লেগে গেছে। যদি পায়োনিয়রে বিজ্ঞাপন দেখি সেটা দেনার দায়ে নিলেমে বিক্রি হচ্ছে তা হলে কিনে ফেলি । রসিক। বলেন কী ঐশবাৰু! শুধু অলিন্দ নিয়ে করবেন কী ? সেই মদমুকুলিতাক্ষীর কথাটা ভেবে দেখবেন। সে নিলেমে পাওয়া শক্ত। ঐশ। কার রুমাল এখানে পড়ে রয়েছে ! রসিক। দেখি দেখি ! তাই তো ! দুর্লভ জিনিস আপনার হাতে ঠেকে দেখছি । বাঃ, দিব্যি গন্ধ ! শ্লোকের লাইনটা বদলাতে হবে মশায়, ছন্দোভঙ্গ হয় হোক গে— বাসষ্ঠীনবপরিমলোদগাররুমালাং ! শ্ৰীশবাবু, এ রুমালটাতে তো আমাদের কুমারসভার পতাকা-নির্মাণ চলবে না। দেখেছেন, কোণে একটি ছোট্ট ন’ অক্ষর লেখা রয়েছে ? শ্ৰীশ। কী নাম হতে পারে বলুন দেখি ? নলিনী ? না, বড্ড চলিত নাম। নীলাম্বুজ ? ভয়ঙ্কর মোট । নীহারিক ? বড়ো বাড়াবাড়ি। বলুন-ন রসিকবাবু, আপনার কী মনে হয় ? রসিক । নাম মনে হয় না মশায়, আমার ভাব মনে আসে । অভিধানে যত “ন’ আছে সমস্ত মাথার মধ্যে রাশীকৃত হয়ে উঠতে চাচ্ছে, ‘নয়ের মালা গেথে একটি নীলোৎপলনয়নার গলায় পরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে— নির্মলনবনীনিন্দিতনবীন— বলুন-ন শ্ৰীশবাবু।– শেষ করে দিন-না— শ্ৰীশ । নবমল্লিকা । রসিক। বেশ বেশ – নির্মলনবনীনিন্দিতনবীননবমল্লিক ! গীতগোবিন্দ মাটি হল । আরো অনেকগুলো ভালো ভালো ‘ন মাথার মধ্যে হাহাকার করে বেড়াচ্ছে, মিলিয়ে দিতে পারছি নে— নিভৃত নিকুঞ্জনিলয়, নিপুণনুপুরনিৰুণ, নিবিড়নীরদনির্মুক্ত— অক্ষয়দাদা থাকলে ভাবতে হত না ! মাস্টারমশায়কে দেখবামাজ ছেলেগুলো যেমন বেঞ্চে নিজ নিজ স্থানে সার বেঁধে বলে— তেমনি অক্ষয়দাদার সাড়া পাবামাৰ কথা