পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀՖ8 覽 রবীন্দ্র-রচনাবলী শৈল । রোজ সন্ধেবেলায় যদি এইরকম উৎপাত করেন তা হলে মাপ করব, নইলে নয়। শ্ৰীশ । আচ্ছা রাজি, কিন্তু এর পরে যখন অনুতাপ উপস্থিত হবে তখন প্রতিজ্ঞ স্বরণ করবেন । শৈল। আমার জন্তে ভাববেন না, কিন্তু আপনার যদি অনুতাপ উপস্থিত হয় তা হলে আপনাকে নিষ্কৃতি দেব। ঐশ। সেই ভরসায় যদি থাকেন তা হলে অনন্তকাল অপেক্ষা করতে হবে। শৈল। রসিকদাদা, তুমি শ্ৰীশবাবুর পকেটের দিকে হাত বাড়াচ্ছ কেন ? বুড়েবয়সে গাটকাট ব্যাবসা ধরবে না কি ? রসিক । না ভাই, সে ব্যাবসা তোদের বয়সেই শোভা পায়। একখানা রুমাল নিয়ে শ্ৰীশবাবুতে আমাতে তক্রার চলছে, তোকে তার মীমাংসা করে দিতে হবে। শৈল। কিরকম ? রসিক। প্রেমের বাজারে বড়ো মহাজনি করবার মূলধন আমার নেই, আমি খুচরো মালের কারবারী— রুমালট, চুলের দড়িট, ছেড়া কাগজে দু-চারটে হাতের অক্ষর, এই-সমস্ত কুড়িয়ে-বাড়িয়েই আমাকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। শ্ৰীশবাবুর যেরকম মূলধন আছে তাতে উনি বাজারমৃদ্ধ পাইকেরি দরে কিনে নিতে পারেন, রুমাল কেন সমস্ত নীলাঞ্চলে অর্ধেক ভাগ বসাতে পারেন ; আমরা যেখানে চুলের দড়ি গলায় জড়িয়ে মরতে ইচ্ছে করি উনি যে সেখানে আগুলফবিলম্বিত চিকুররাশির সুগন্ধ ঘনান্ধকারের মধ্যে সম্পূর্ণ অস্ত যেতে পারেন। উনি উদ্ধৃবৃত্তি করতে আসেন কেন ? শ্ৰীশ। অবলাকাস্তবাবু, আপনি তো নিরপেক্ষ ব্যক্তি, রুমালখানা এখন আপনার হাতেই থাকৃ, উভয় পক্ষের বক্তৃতা শেষ হয়ে গেলে বিচারে যার প্রাপ্য হয় তাকেট দেবেন। শৈল। (রুমালখানি পকেটে পুরিয়া ) আমাকে আপনি নিরপেক্ষ লোক মনে করছেন বুঝি ? এই কোণে যেমন একটি ন’ অক্ষর লাল স্বতোয় সেলাই করা আছে আমার হৃদয়ের একটি কোণে খুঁজলে দেখতে পাবেন ওই অক্ষরটি রক্তের বর্ণে লেখা আছে। এ রুমাল আমি আপনাদের কাউকেই দেব না। ঐশ। রসিকবাবু, এ কিরকম জবৰ্দ্দস্তি ? অার ন’ অক্ষরটিও তো বড়ে ভয়ানক অক্ষর ! لم রসিক । শুনেছি বিলিতি শাস্ত্রে দ্যায়ধর্মও অন্ধ, ভালোবাসাও অন্ধ । এখন অন্ধে লড়াই হোক, যার বল বেশি তারই জিত হবে। .