পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী دهه দক্ষিনে হাওয়ায় তোমারও প্রাণটা চঞ্চল হয়, কিন্তু পাছে কেউ তোমাকে কবিত্বের অপবাদ দেয় ব’লে মলয় সমীরণটাকে একেবারেই আমল দিতে চাও না। এতে তোমার বাহাদুরিটা কী জিজ্ঞাসা করি ? আমি তোমার কাছে আজ মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করছি, আমার ফুল ভালো লাগে, জ্যোংস্ক ভালো লাগে, দক্ষিনে হাওয়া ভালো লাগে— বিপিন । এবং— শ্ৰীশ । এবং যা কিছু ভালো লাগবার মতো জিনিস সবই ভালো লাগে। বিপিন। বিধাতা তো তোমাকে ভারি আশ্চর্য রকম ছাচে গড়েছেন দেখছি । শ্রীশ । তোমার ছাচ আরও আশ্চর্য । তোমার লাগে ভালো, কিন্তু বল অন্ত রকম— আমার সেই শোবার ঘরের ঘড়িটার মতো— সে চলে ঠিক, কিন্তু বাজে ভুল । বিপিন। কিন্তু শ্ৰীশ, তোমার যদি সব মনোহর জিনিসই মনোহর লাগতে লাগল তা হলে তো আসন্ন বিপদ । শ্ৰীশ । আমি তো কিছুই বিপদ বোধ করি নে। বিপিন । সেই লক্ষণটাই তো সব চেয়ে খারাপ। রোগের যখন বেদনাবোধ চলে যায় তখন আর চিকিৎসার রাস্ত থাকে না। আমি, ভাই, স্পষ্টই কবুল করছি স্ত্রীজাতির একটা আকর্ষণ আছে— চিরকুমার-সভা যদি সেই আকর্ষণ এড়াতে চান তা হলে তাকে খুব তফাত দিয়ে যেতে হবে। ঐশ। ভুল, ভুল, ভয়ানক ভুল ! তুমি তফাতে থাকলে কী হবে, তারা তো তফাতে থাকেন না। সংসাররক্ষার জন্তে বিধাতাকে এত নারী স্বষ্টি করতে হয়েছে যে র্তাদের এড়িয়ে চলা অসম্ভব। অতএব কৌমার্য যদি রক্ষা করতে চাও তা হলে নারীজাতিকে অল্পে অল্পে সইয়ে নিতে হবে । ওই-যে স্ত্রীসভ্য নেবার নিয়ম হয়েছে এতদিন পরে কুমারসভা চিরস্থায়ী হবার উপায় অবলম্বন করেছে। কিন্তু কেবল একটিমাত্র মহিলা হলে চলবে না বিপিন, অনেকগুলি স্ত্রীসভ্য চাই। বদ্ধ ঘরের একটি জানল। খুলে ঠাণ্ড লাগালে সর্দি ধরে, খোলা হাওয়ায় থাকলে সে বিপদ নেই। বিপিন। আমি তোমার ঐ খোলা হাওয়া বদ্ধ হাওয়া বুঝি নে ভাই! যার সর্দির ধাত তাকে সর্দি থেকে রক্ষা করতে দেবতা মচুন্য কেউ পারে না । ဒံရဲ့ ] তোমার ধাত কী বলছে হে ? বিপিন। সে কথা খোলসা করে বললেই বুঝতে পারবে তোমার ধাতের সঙ্গে তার চমৎকার মিল আছে। নাড়ীটা যে সব সময়ে ঠিক চিরকুমারের নাড়ীর মতো চলে তা জাক করে বলতে পারব না। ঐশ। ওইটে তোমার আর-একটা ভুল। চিরকুমারের নাড়ীর উপর উনপঞ্চাশ