পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

w©ፃ8 ब्रदौटा-ब्रछनांवली কর্মবিভেদ শ্রেণীবিভেদ স্বনির্দিষ্ট বলিয়াই, উচ্চশ্রেণীয়ের নিজের স্বাতন্ত্র্যরক্ষার জন্ত নিয়শ্রেণীকে লাঞ্ছিত করিয়া বহিষ্কৃত করে না। ব্রাহ্মণের ছেলেরও বাগদিদাদ আছে। গণ্ডিটুকু অবিতর্কে রক্ষিত হয় বলিয়াই পরস্পরের মধ্যে যাতায়াত, মাছবেমাচুষে হৃদয়ের সম্বন্ধ বাধাহীন হইয়া উঠে— বড়োদের আত্মীয়তার ভার ছোটোদের হাড়গোড় একেবারে পিষিয়া ফেলে না। পৃথিবীতে যদি ছোটোবড়োর অসাম্য অবশ্যম্ভাবীই হয়, যদি স্বভাবতই সর্বত্রই সকলপ্রকার ছোটোর সংখ্যাই অধিক ও বড়োর সংখ্যাই স্বল্প হয়, তবে সমাজের এই অধিকাংশকেই অমর্যাদার লজ্জা হইতে রক্ষা করিবার জন্য ভারতবর্ষ ষে উপায় বাহির করিয়াছে তাহারই শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করিতে হইবে। যুরোপে এই অমর্যাদার প্রভাব এতদূর ব্যাপ্ত হইয়াছে যে, সেখানে এক দল আধুনিক স্ত্রীলোক, স্ত্রীলোক হইয়াছে বলিয়াই লজ্জাবোধ করে। গর্ভধারণ করা, স্বামীসস্তানের সেবা করা, তাহারা কুষ্ঠার বিষয় জ্ঞান করে। মানুষ বড়ো, কর্মবিশেষ বড়ে নহে ; মনুষ্যত্ব রক্ষা করিয়া যে কৰ্মই করা যায় তাহাতে অপমান নাই ; দারিদ্র্য লজ্জাকর নহে, সেবা লজ্জাকর নহে, হাতের কাজ লজ্জাকর নহে— সকল কর্মে, সকল অবস্থাতেই সহজে মাথা তুলিয়া রাখা যায়, এ ভাব যুরোপে স্থান পায় না। সেইজন্ত সক্ষম অক্ষম সকলেই সর্বশ্রেষ্ঠ হইবার জন্য সমাজে প্রভূত নিফলত, অস্তহীন বৃথাকর্ম ও আত্মঘাতী উদ্যমের স্বষ্টি করিতে থাকে। ঘর ঝাট দেওয়া, জল আনা, বাটনা বাট, আত্মীয়-অতিথি সকলের সেবাশেষে নিজে জাহার করা, ইহা যুরোপের চক্ষে অত্যাচার ও অপমান, কিন্তু আমাদের পক্ষে ইহা গৃহলক্ষ্মীর উন্নত অধিকার— ইহাতেই তাহার পুণ্য, তাহার সন্মান। বিলাতে এই-সমস্ত কাজে যাহারা প্রত্যহ রত থাকে, শুনিতে পাই, তাহারা ইতরভাব প্রাপ্ত হইয়া ঐশ্রষ্ট হয়। কারণ, কাজকে ছোটো জানিয়া তাহা করিতে বাধ্য হইলে, মানুষ নিজে ছোটো হয় । আমাদের লক্ষ্মীগণ যতই সেবার কর্মে ব্ৰতী হন, তুচ্ছ কর্মসকলকে পুণ্যকর্ম বলিয়৷ সম্পন্ন করেন, অসামান্যতাহীন স্বামীকে দেবতা বলিয়া ভক্তি করেন, ততই তাহার ঐসৌন্দর্ধে পবিত্রতায় মণ্ডিত হইয় উঠেন— তাহদের পুণ্যজ্যোতিতে চতুর্দিক হইতে ইতরতা অভিভূত হইয়া পলায়ন করে। যুরোপ এই কথা বলেন যে, সকল মাহুষেরই সব হইবার অধিকার অাছে— এই ধারণাতেই মানুষের গৌরব। কিন্তু বন্ধতই সকলের সব হইবার অধিকার নাই, এই অতি সত্যকথাটি সবিনয়ে গোড়াতেই মানিয়া লওয়া ভালো। বিনয়ের সহিত মানিয়া লইলে তাহার পরে আর কোনো অগৌরব নাই। রামের বাড়িতে খামের