পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\లిSe রবীন্দ্র-রচনাবলী হইয়া আসিয়াছে। কেবল তাহাই নয় ; ব্রাহ্মণের সমাজের যে উচ্চকৰ্মে নিযুক্ত ছিলেন সে কর্মে শৈথিল্য ঘটাতে, সমাজেরও সন্ধিবন্ধন প্রতিদিন বিশ্লিষ্ট হইয়া আসিতেছে। যদি প্রাচ্যভাবেই আমাদের দেশে সমাজ রক্ষা করিতে হয়, যদি যুরোপীয় প্রণালীতে এই বহুদিনের বৃহৎ সমাজকে আমূল পরিবর্তন করা সম্ভবপর বা বাঞ্ছনীয় না হয়, তবে যথার্থ ব্রাহ্মণসম্প্রদায়ের একান্ত প্রয়োজন আছে। তাহারা দরিত্র হইবেন, পণ্ডিত হইবেন, ধর্মনিষ্ঠ হইবেন, সর্বপ্রকার আশ্রমধর্মের অাদর্শ ও আশ্রয় -স্বরূপ হইবেন ও গুরু হইবেন। چا যে সমাজের এক দল ধনমানকে অবহেলা করিতে জানেন, বিলাসকে ঘৃণা করেন— যাহাদের আচার নির্মল, ধর্মনিষ্ঠ দৃঢ়, যাহারা নিঃস্বার্থভাবে জ্ঞান-অৰ্জন ও নিঃস্বার্থভাবে জ্ঞান-বিতরণে রত— পরাধীনতা বা দারিদ্র্যে সে সমাজের কোনো অবমাননা নাই। সমাজ যাহাকে যথার্থভাবে সম্মাননীয় করিয়া তোলে সমাজ তাহার দ্বারাই সন্মানিত হয় । o সকল সমাজেই মান্তব্যক্তিরা, শ্রেষ্ঠ লোকেরাই, নিজ নিজ সমাজের স্বরূপ । ইংলণ্ড কে যখন আমরা ধনী বলি তখন অগণ্য দরিদ্রকে হিসাবের মধ্যে আনি না। যুরোপকে যখন আমরা স্বাধীন বলি, তখন তাহার বিপুল জনসাধারণের দুঃসহ অধীনতাকে গণ্য করি না । সেখানে উপরের কয়েক জন লোকই ধনী, উপরের কয়েক জন লোকই স্বাধীন, উপরের কয়েক জন লোকই পাশবত হইতে মুক্ত। এই উপরের কয়েক জন লোক যতক্ষণ নিয়ের বহুতর লোককে মুখস্বাস্থ্য জ্ঞানধর্ম দিবার জন্য সর্বদা নিজের ইচ্ছাকে প্রয়োগ ও নিজের মুখকে নিয়মিত করে ততক্ষণ সেই সভ্যসমাজের কোনো ভয় নাই। i. যুরোপীয় সমাজ এই ভাবে চলিতেছে কি না সে আলোচনা বৃথা মনে হইতে পারে, কিন্তু সম্পূর্ণ বৃথা নহে। যেখানে প্রতিযোগিতার তাড়নায়, পাশের লোককে ছাড়াইয়া উঠিবার অত্যাকাজায়, প্রত্যেককে প্রতি মুহূর্তে লড়াই করিতে হইতেছে, সেখানে কর্তব্যের আদর্শকে বিশুদ্ধ রাখা কঠিন। এবং সেখানে কোনো একটা সীমায় জাসিয়া অাশাকে সংঘত করাও লোকের পক্ষে দুঃসাধ্য হয়। যুরোপের বড়ো বড়ে সাম্রাজ্যগুলি পরস্পর পরস্পরকে লঙ্ঘন করিয়া ৰাইবার প্রাণপণ চেষ্টা করিতেছে, এ অবস্থায় এমন কথা কাহারও মুখ দিয়া বাহির হইতে পারে না যে, বরঞ্চ পিছাইয়া প্রথম শ্রেণী হইতে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়িৰ, তৰু অস্কায়