পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষ 8>> বেশি, মিত্রা যায় বেশি– কিন্তু তাহারা প্রফুল্ল নয়, সভষ্ট নয়, শ্রমান্নুরাগী নয়, তাহারা আইন মানে না। তাহাজের কর্ম শরীরমনের পক্ষে অস্বাস্থ্যকর, তাহার প্রকৃতি হইতে বিচ্যুত হইয়া, ভূমিখণ্ডের অধিকার হইতে বঞ্চিত হইয়া, শহরে এবং কারখানার মধ্যে ঠাসাঠালি করিয়া থাকে । “আমাদের কবিগণ— লেখকগণ— ধনের মধ্যে, ক্ষমতার মধ্যে, নানাপ্রকার উদযোগের মধ্যে, কল্যাণ অনুসন্ধান করিতে উপদেশ দেন নাই ; কিন্তু মানবজীবনের অত্যন্ত সরল ও বিশ্বব্যাপী সম্বন্ধগুলির সংযত স্থনির্বাচিত স্বমার্জিত রসাস্বাদনের পথে আমাদের মনকে তাহারা প্রবর্তিত করিয়াছেন। এই জিনিসটা আমাদের আছে— এটা তোমরা আমাদিগকে দিতে পার না, কিন্তু এটা তোমরা অনায়াসে অপহরণ করিতে পার । তোমাদের কলের গর্জনের মধ্যে ইহার স্বর শোনা যায় না, তোমাদের কারখানার কালো ধোওয়ার মধ্যে ইহাকে দেখিতে পাওয়া যায় না, তোমাদের বিলাতী জীবনযাত্রার ঘূর্ণি এবংঘর্ষণের মধ্যে ইহা মরিয়া যায়। যে কেজো লোকদিগকে তোমরা অত্যন্ত খাতির করিয়া থাক, যখন দেখি তাহারা ঘণ্টার পর ঘণ্টায়, দিনের পর দিনে, বৎসরের পর বৎসরে, তাহদের জাতার মধ্যে আনন্দহীন অগত্যাপ্রেরিত খাটুনিতে নিযুক্ত— যখন দেখি তাহদের দিনের উৎকণ্ঠাকে তাহার স্বল্পাবশিষ্ট অবকাশের মধ্যে টানিয়া আনিতেছে, এবং পরিশ্রমের দ্বারা ততটা নহে যতটা শুষ্ক সংকীর্ণ দুশ্চিন্তা -দ্বারা আপনাকে জীর্ণ করিয়া ফেলিতেছে— তখন এ কথা স্বীকার করিতেই হইবে ষে, আমাদের দেশের প্রাচীন বৈশ্ববৃত্তির সরলতর পদ্ধতির কথা স্মরণ করিয়া আমি সস্তোষ লাভ করি, এবং আমাদের যে-সকল চিরব্যবহৃত পথগুলি আমাদের অভ্যস্ত চরণের কাছে এমন পরিচিত যে তাহ দিয়া চলিবার সময়েও অনন্ত নক্ষত্রমণ্ডলীর দিকে দৃষ্টিপাত করিবার জন্ত জামাদের অবকাশের অভাব ঘটে না, তোমাদের সমুদয় নূতন ও ভয়সংকুল বর্তের চেয়ে সেই পথগুলিকে আমি অধিক মূল্যবান বলিয়া গৌরব করি।” ইহার পরে লেখক রাষ্ট্ৰতন্ত্রের কথা তুলিয়াছেন। তিনি বলেন— so ‘গবর্মেন্ট, তোমাদের কাছে এতই প্রধান এবং সর্বত্রই সে তোমাদের সঙ্গে এমনি লাগিয়াই আছে যে, ৰে জাতি গবর্ষেষ্টকে প্রায় সম্পূর্ণই বাদ দিয়া চলিতে পারে, তাছার অবস্থা তোমরা কল্পনাই করিতে পার না। অথচ আমাদেরই সেই অবস্থা। খামাদের সভ্যতার সরল এবং অঙ্কত্রিম ভাব, জামাদের লোকদের শান্তিপ্রিয় প্রকৃতি এবং সর্বোচ্চে জামাদের সেই 8ԱՀԵ