পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छांब्रप्ठवर्ष 8ર& পাথরে চাপা দিয়া রাখে, তাহাতে নামধাম-তারিখ খুদিয়া রাখিয়া দেয় এবং তাহার চারি দিকে ফুলের গাছ করে। আমরা পরমাষ্ট্ৰীয়ের মৃতদেহ শ্মশানে ভস্ম করিয়া চলিয়া জালি। কিন্তু প্রিয়জনের প্রিয়ত্ব কি আমাদের কাছে কিছুমাত্র অল্প ? ভালোবাসিতে এবং শোক করিতে আমরা জানি না, ইংরাজ জানে, এ কথা কবর এবং শ্মশানের সাক্ষ্য লইয়া ঘোষণা করিলেও হৃদয় তাহাতে সায় দিতে পারে না । ইহার অনুরূপ তর্ক এই যে, ‘ধ্যাঙ্ক, য়ুর প্রতিবাক্য আমরা বাংলায় ব্যবহার করি ন, অতএব আমরা অকৃতজ্ঞ। আমাদের হৃদয় ইহার উত্তর এই বলিয়া দেয় যে, কৃতজ্ঞতা আমার যে আছে আমিই তাহ জানি, অতএব থ্যাঙ্ক, য়ু বাক্য -ব্যবহারই যে কৃতজ্ঞতার একমাত্র পরিচয় তাহা হইতেই পারে না । থ্যাঙ্ক, য়ু শব্দের দ্বারা হাতে হাতে কৃতজ্ঞতা ঝাড়িয়া ফেলিবার একটা চেষ্টা আছে, সেটা আমরা জবাব-স্বরূপ বলিতে পারি। যুরোপ কাহারও কাছে বাধ্য থাকিতে চাহে না— সে স্বতন্ত্র। কাহারও কাছে তাহার কোনো দাবি নাই, স্বতরাং যাহা পায় তাহ সে গায়ে রাখে না। শুধিয়া তখনই নিষ্কৃতি পাইতে চায় । পরম্পরের প্রতি আমাদের দাবি আছে, আমাদের সমাজের গঠনই সেইরূপ। আমাদের সমাজে যে ধনী সে দান করিবে, যে গৃহী সে আতিথ্য করিবে, যে জ্ঞানী সে অধ্যাপন করিবে, যে জ্যেষ্ঠ সে পালন করিবে, ষে কনিষ্ঠ সে সেব করিবে —ইহাই বিধান। পরম্পরের দাবিতে আমরা পরস্পর বাধ্য। ইহাই আমরা মঙ্গল বলিয়া জানি। প্রার্থী যদি ফিরিয়া ষায় তবে ধনীর পক্ষেই তাহা অশুভ, অতিথি যদি ফিরিয়া যায় তবে গৃহীর পক্ষেই তাহ অকল্যাণ। শুভকর্ম কর্মকর্তার পক্ষেই শুভ। এইজন্ত নিমন্ত্রণকারীই নিমন্ত্রিতের নিকট কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন । আহুতবর্গের সন্তোষে যে-একটি মঙ্গলজ্যোতি গৃহ পরিব্যাপ্ত করিয়া উদ্ভাসিত হয় তাহ নিমন্ত্রণকারীর পক্ষেই পুরস্কার। আমাদের দেশে নিমন্ত্রণের প্রধানতম ফল নিমন্ত্রিত পায় না, নিমন্ত্রণকারীই পায়— তাহা মঙ্গলকর্ম স্বসম্পন্ন করিবার আনন্দ, তাহ রসনাতৃপ্তির অপেক্ষ অধিক । এই মঙ্গল যদি আমাদের সমাজের মুখ্য অবলম্বন না হইত তবে সমাজের প্রকৃতি এবং কর্ম অন্ত রকমের হইত। স্বাখ এবং স্বাতন্ত্র্যকে যে বড়ো করিয়া দেখে পরের জন্ত কাজ করিতে তাহার সর্বদা উত্তেজনা আবগুক করে। সে মাহ দেয় অন্তত তাহার একটা রসিদ্ধ লিখিয়া রাখিতে চায়। তাহার ষে ক্ষমতা আছে সেই ক্ষমতার দ্বারা অন্তের উপরে সে ৰদি প্রভাব বিস্তার করিতে না পারে, তবে ক্ষমতা প্রয়োগ করিবার যথেষ্ট উৎসাহ তাহার না থাকিতে পাৰে। এইজন্ত স্বাতন্ত্র্য