পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 Se ब्ररौद्र-ब्रळनांदलौ পুস্তক কতই প্রকাশিত হইতেছে, কিন্তু যদি অবিচারে সঞ্চয় করিবার প্রবৃত্তি না থাকে— যদি মনে করি কেবল যে বইগুলি যথার্থই আমার প্রিয়, যাহা আমার পক্ষে চিরদিন পড়িবার যোগ্য, সেইগুলিই রক্ষা করিব— তবে শত বৎসর পরমায়ু হইলেও আমার পাঠ্যগ্রন্থ আমার পক্ষে দুর্ভর হইয়া উঠে না। আমার প্রকৃতি যে মহাত্মাদের প্রত্যহস্মরণযোগ্য বলিয়া ভক্তি করে তাহাজের নাম যদি উচ্চারণ করি, তবে কতটুকু সময় লয় ? প্রত্যেক পাঠক যদি নিজের মনে চিন্তা করিয়া দেখেন তবে কয়টি নাম তাহাদের মুখে আসে ? ভক্তি ধাহাদিগকে হৃদয়ে সজীব করিয়া না রাখে, বাহিরে তাহদের পাথরের মূর্তি গড়িয়া রাখিলে আমার তাহাতে কী লাভ ? f র্তাহাদের তাহাতে লাভ আছে এমন কথা উঠিতেও পারে। লোকে দল বাধিয়া প্রতিম স্থাপন করিবে, অথবা মৃতদেহ বিশেষ স্থানে সমাহিত হইয়া গৌরব প্রাপ্ত হইবে, এই আশা স্পষ্টত বা অলক্ষ্যে মনকে উৎসাহ দিতেও পারে। কবরের দ্বারা খ্যাতিলাভ করিবার একটা মোহ আছে, তাহ তাজমহল প্রভৃতির ইতিহাস হইতে জানা যায়। কিন্তু আমাদের সমাজ মহাত্মাদিগকে সেই বেতন দিয়া বিদায় করিতে চাহে নাই। আমাদের সমাজে মাহাত্ম্য সম্পূর্ণ বিনা বেতনের। ভারতবর্ষে অধ্যাপক সমাজের নিকট হইতে ব্ৰাহ্মণের প্রাপ্য দানদক্ষিণ গ্রহণ করিয়া থাকেন, কিন্তু অধ্যাপনার বেতন শোধ করিয়া দিয়া আমাদের সমাজ তাহাদিগকে অপমানিত করে না। পূর্বেই বলিয়াছি, মঙ্গলকর্ম যিনি করিবেন তিনি নিজের মঙ্গলের জন্তই করিবেন ইহাই ভারতবর্ষের আদর্শ। কোনো বাহ মূল্য লইতে গেলেই মঙ্গলের মূল্য কমিয়া যায় । দলের একটা উৎসাহ আছে, তাহ সংক্রামক, তাহ মূঢ়ভাবে পরস্পরের মধ্যে সঞ্চারিত হয়— তাহার অনেকটা অলীক । ‘গোলে হরিবোল” ব্যাপারে হরিবোল যতটা থাকে গোলের মাত্রা তাহা অপেক্ষ অনেক বেশি হইয় পড়ে। দলের আন্দোলনে অনেক সময় তুচ্ছ উপলক্ষ্যে ভক্তির ঝড় উঠতে পারে— তাহার সাময়িক প্রবলত। যতই হোক-না কেন, ঝড় জিনিসটা কখনোই স্থায়ী নহে। সংসারে এমন কত বার কত শত দলের দেবতার অকস্মাৎ স্বষ্টি হইয়াছে এবং জয়ঢাক বাজিতে বাজিতে অতলস্পর্শ বিশ্বতির মধ্যে তাহদের বিসর্জন হইয়া গেছে। পাথরের যুক্তি গড়িয়া জবৰ্দ্দস্তি করিয়া কি কাহাকেও মনে রাখা যায় ? ওয়েস্ট মিনিস্টার জ্যাবিতে কি এমন অনেকের নাম পাথরে খোদা হয় নাই ইতিহাসে যাহাজের নামের অক্ষর