পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৫

ভারতবর্ষ 88C) বুকে বাজিয়াছে। আমাদের কান চোখটা ছিল ইহলোকের দিকে— সেই তরফ হইতে আমাদের শিক্ষা যথেষ্ট হইয়াছে। সেই দিকের ঘা খাইয়া আমরা মরিলাম। किरू चडांव मां बांग्न अरण । নিজের দোষ কবুল করিলাম, এবার পরের প্রতি দোষারোপ করিবার অবসর পাওয়া যাইবে । অনেকে এরূপ চেষ্টাকে নিন্দা করেন, আমরাও করি। কিন্তু যে লোক বিচার করে অন্তে তাহাকে বিচার করিবার অধিকারী। সে অধিকারটা ছাড়িতে পারিব না। তাহাতে পরের কোনো উপকার হইবে বলিয়া আশা করি না— কিন্তু অপমানের দিনে যেখানে যতটুকু আত্মপ্রসাদ পাওয়া যায় তাহ ছাড়িয়া দিতে পারিব না। আমরা দেখিয়াছি, আমাদের অত্যুক্তি অলস বুদ্ধির বাহ প্রকাশ। তা ছাড়া সুদীর্ঘকাল পরাধীনতাবশত চিত্তবিকারেরও হাত দেখিতে পাই । যেমন আমাদিগকে যখন-তখন, সময়ে অসময়ে, উপলক্ষ্য থাক্ বা না থাক, চীৎকার করিয়া বলিতে হয়— আমরা রাজভক্ত। অথচ ভক্তি করিব কাহাকে তাহার ঠিকানা নাই। আইনের বইকে, না কমিশনার-সাহেবের চাপরাশকে, না পুলিসের দারোগাকে ? গবর্মেন্ট, আছে, কিন্তু মানুষ কই ? হৃদয়ের সম্বন্ধ পাতাইব কাহার সঙ্গে ? আপিসকে বক্ষে আলিঙ্গন করিয়া ধরিতে পারি না। মাঝে মাঝে অপ্রত্যক্ষ রাজার মৃত্যু বা অভিষেক উপলক্ষ্যে যখন বিবিধ চাদার আকারে রাজভক্তি দোহন করিয়া লইবার আয়োজন হয় তখন ভীতচিত্তে শুষ্ক ভক্তি ঢাকিবার জন্য অতিদান ও অত্যুক্তির দ্বারা রাজপাত্র কানায় কানায় পূর্ণ করিয়া দিতে হয়। যাহা স্বাভাবিক নহে তাহাকে প্রমাণ করিতে হইলে লোকে অধিক চীৎকার করিতে থাকে— এ কথা ভুলিয়া যায় ষে, মৃদ্ধস্বরে যে বেস্থর ধরা পড়ে না চীৎকারে তাহা চার-গুণ হইয়া উঠে । কিন্তু এই শ্রেণীর অত্যুক্তির জন্ত আমরা এক দায়ী নই। ইহাতে পরাধীন জাতির ভীরুতা ও হীনতা প্রকাশ পায় বটে, কিন্তু এই অবস্থাটায় আমাদের কর্তৃপুরুষদের মহত্ব ও সত্যাকুরাগের প্রমাণ দেয় না। জলাশয়ের জল সমতল নহে এ কথা যখন কেহ অমানমুখে বলে তখন বুঝিতে হইবে, সে কথাটা অবিশ্বাস্ত হইলেও তাহার মনিব তাহাই শুনিতে চাহে। আজকালকার সাম্রাজ্যমদমত্ততার দিনে ইংরেজ নানাপ্রকারে শুনিতে চায় আমরা রাজভক্ত, আমরা তাহার চরণতলে স্বেচ্ছায় বিক্রীত। এ কথা জগতের কাছে তাহার ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত করিতে চাহে। o এ দিকে আমাদের প্রতি সিকি-পয়সার বিশ্বাস মনের মধ্যে নাই ; এত বড়ো দেশটা সমস্ত নিঃশেষে নিরস্ত্র , একটা হিংস্র পণ্ড দ্বারের কাছে জালিলে ভারে জর্গল । 8|\es