পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

é ०२ রবীন্দ্র-রচনাবলী হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ছিলেন। ক্ষুধিত পীড়িত অনাথ-অসহায়দের জন্য জাজ তিনি বর্তমান নাই, কিন্তু তাহার মহৎচরিত্রের ষে অক্ষয়বট তিনি বঙ্গভূমিতে রোপণ করিয়া গিয়াছেন তাহার তলদেশ সমস্ত বাঙালিজাতির তীর্থস্থান হইয়াছে। আমরা সেইখানে আসিয়া আমাদের তুচ্ছতা, ক্ষুদ্রতা, নিফল আড়ম্বর ভুলিয়া, স্বল্পতম তর্কজাল এবং স্থূলতম জড়ত্ব বিচ্ছিন্ন করিয়া, সরল সবল অটল মাহীত্ম্যের শিক্ষা লাভ করিয়া যাইব । আজ আমরা বিদ্যাসাগরকে কেবল বিদ্যা ও দয়ার আধার বলিয়া জানি– এই বৃহৎ পৃথিবীর সংস্রবে আসিয়া যতই আমরা মানুষ হইয়া উঠিব, ষতই আমরা পুরুষের মতো দুর্গমবিস্তীর্ণ কর্মক্ষেত্রে অগ্রসর হইতে থাকিব, বিচিত্র শৌর্যবীর্ষ-মহত্ত্বের সহিত যতই আমাদের প্রত্যক্ষ সন্নিহিত ভাবে পরিচয় হইবে, ততই আমরা নিজের অস্তরের মধ্যে অনুভব করিতে থাকিব যে, দয়া নহে, বিদ্যা নহে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের চরিত্রে প্রধান গৌরব তাহার অজেয় পৌরুষ, তাহার অক্ষয় মচুন্যত্ব ; এবং যতই তাহ অনুভব করিব ততই আমাদের শিক্ষা সম্পূর্ণ ও বিধাতার উদ্দেশু সফল হইবে, এবং বিদ্যাসাগরের চরিত্র বাঙালির জাতীয় জীবনে চিরদিনের জন্ত প্রতিষ্ঠিত হইয়া থাকিবে। उायं ५७०२ বিদ্যাসাগরচরিত শ্রদ্ধাস্পদ ক্রযুক্ত শিবনাথ শাস্ত্রী মহাশয় বিদ্যাসাগরের জীবনী সম্বন্ধে যে প্রবন্ধ প্রকাশ করিয়াছেন তাহার আরম্ভে ষোগবাশিষ্ঠ হইতে নিম্নলিখিত শ্লোকটি উদ্ভূত করিয়া দিয়াছেন— o তরবোইপি হি জীবস্তি জীবস্তি মৃগপক্ষিণঃ। স জীবতি মনো ষন্ত মননেন হি জীবতি ॥ তরুলতাও জীবনধারণ করে, পশুপক্ষীও জীবনধারণ করে ; কিন্তু সেই প্রকৃতরূপে জীবিত যে মনের দ্বারা জীবিত থাকে । M মনের জীবন মননক্রিয়া এবং সেই জীবনেই মনুষ্যত্ব। ." প্রাণ সমস্ত দেহকে ঐক্যদান করিয়া তাহার বিচিত্র কার্বসকলকে একতন্ত্রে নিয়মিত করে। প্রাণ চলিয়া গেলে দেহ পঞ্চাপ্ৰাপ্ত হয় ; তাহার ঐক্য ছির হইয় মাটির অংশ মাটিতে, জলের অংশ জলে মিশিয়া যায়। নিয়তক্রিয়াশীল নিরলস প্রাণই