পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&98 রবীন্দ্র-রচনাবলী শিক্ষার ঔদ্ধত্যের দিনে শিশু বঙ্গভাষাকে বহষত্বে কৈশোরে উত্তীর্ণ করিয়া দিয়াছেন, যিনি দেশকে তাহার প্রাচীন ঐশ্বর্ষের ভাণ্ডার উদঘাটিত করিতে প্রবৃত্ত করিয়াছেন, যিনি তাহার তপঃপরায়ণ একলক্ষ্য জীবনের দ্বারা আধুনিক বিষয়লুব্ধ সমাজে ব্রহ্মনিষ্ঠ গৃহস্থের আদর্শ পুনঃস্থাপিত করিয়া গিয়াছেন, তিনি এই পরিবারকে সমস্ত মহন্তপরিবারের সহিত সংযুক্ত করিয়া দিয়া, ইহার সর্বোচ্চ লাভকে সমস্ত মহন্তের লাভ করিয়া দিয়া, ইহার পরম ক্ষতিকে সমস্ত মকুন্যের ক্ষতি করিয়া দিয়া, আমাদিগকে ষে গৌরব দান করিয়াছেন, অন্ত সমস্ত ক্ষুদ্র মানমর্যাদা বিশ্বত হইয়া অস্ত আমরা তাহাই স্মরণ করিব ও একান্ত ভক্তির সহিত তাহার নিকটে আপনাকে প্রণত করিয়া দিব ও ধাহীর মধ্যে তিনি আশ্রয়লাভ করিয়াছেন সমস্ত ধনমানের উর্ধের্ব খ্যাতিপ্রতিপত্তির উর্ধের্ব র্তাহাকেই দর্শন করিব । হে বিশ্ববিধাতা, আজ আমাদের সমস্ত বিষাদ-অবসাদ দূর করিয়া দাও— মৃত্যু সহসা যে যবনিক অপসারণ করিয়াছে তাহার মধ্য দিয়া তোমার অমৃতলোকের আভাস আমাদিগকে দেখিতে দাও । সংসারের নিয়ত উত্থানপতন, ধনমানজীবনের আবির্ভাব-তিরোভাবের মধ্যে তোমার’ ‘আনন্দরূপমমৃতং প্রকাশ করে । কত বৃহৎ সাম্রাজ্য ধূলিসাৎ হইতেছে, কত প্রবল প্রতাপ অস্তমিত হইতেছে, কত লোকবিশ্রত খ্যাতি বিস্তুতিময় হইতেছে, কত কুবেরের ভাণ্ডার ভগ্নস্তৃপের বিভীষিক রাখিয়া অস্তৰ্হিত হইতেছে— কিন্তু হে আনন্দময়, এই-সমস্ত পরিবর্তনপরম্পরার মধ্যে ‘মধু বাতা ঋতায়তে, বায়ু মধুবহন করিতেছে, ‘মধু ক্ষরস্তি সিন্ধব', সমুদ্রসকল মধুক্ষরণ করিতেছে— তোমার অনন্ত মাধুর্যের কোনো ক্ষয় নাই— তোমার সেই বিশ্বব্যাপিনী মাধুরী সমস্ত শোকতাপবিক্ষোভের কুহেলিকা ভেদ করিয়া অস্ত আমাদের চিত্তকে অধিকার করুক । মাধবীর্ন সত্ত্বোষধী, মধু নক্তম উতোষ সী, মধুমৎ পার্থিবং রজঃ, মধু ষ্ঠৌরস্তু নঃ পিতা, মধুমান্নো বনস্পতি, মধুমান অস্তু স্বর্য, মাধবীর্গাবো ভবস্তু নঃ। ওষধিরা আমাদের পক্ষে মাধবী হউক, রাত্রি এবং উষা আমাদের পক্ষে মধু হউক, পৃথিবীর ধূলি আমাদের পক্ষে মধুমান হউক, এই-যে আকাশ পিতার স্তায় সমস্ত জগৎকে ধারণ করিয়া আছে ইহা আমাদের পক্ষে মধু হউক, বনস্পতি আমাদের পক্ষে মধুমান হউক, স্বৰ্ধ মধুমান হউক এবং গাভীর আমাদের জন্ত মাধবী হউক । S\}} }