পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SV8 রবীন্দ্র-রচনাবলী নক্ষত্র-রতন-দীপ্ত নীলকান্ত সুপ্তিসিংহাসনে তোমার মহান জাগরণ । আমারে জাগায়ে রাখে। সে নিস্তব্ধ জাগরণতলে নির্নিমেষ পূর্ণসচেতন । কত নিদ্রাহীন চক্ষু যুগে যুগে তোমার আঁধারে খুঁজেছিল প্রশ্নের উত্তর । তোমার নির্বক মুখে একদৃষ্টি চেয়েছিল বসি কত ভক্ত জুড়ি দুই কর । , দিবস মুদিলে চক্ষু, ধীরপদে কৌতুহলীদল অঙ্গনে পশিয়া সাবধানে তব দীপহীন কক্ষে সুখদুঃখ জন্মমরণের ফিরিয়াছে গোপন সন্ধানে । স্তম্ভিত তমিস্রপুঞ্জ কম্পিত করিয়া অকস্মাৎ অর্ধরাত্রে উঠেছে উচ্ছসি। সদ্যস্ফুট ব্ৰহ্মমন্ত্র আনন্দিত ঋষিকণ্ঠ হতে আন্দোলিয়া ঘন তন্দ্রারাশি । পীড়িত ভুবন লাগি মহাযোগী করুণাকাতর, চকিতে বিদ্যুৎরেখাবৎ তোমার নিখিললুপ্ত অন্ধকারে দাড়ায়ে একাকী : দেখেছে। বিশ্বের মুক্তিপথ ! জগতের সেইসব যামিনীর জাগুরাকদল সঙ্গীহীন তব সভাসদ কে কোথা বসিয়া আছে আজি রাত্রে ধরণীর মাঝে, গনিতেছে গোপন সম্পদ- ২ কেহ করে নাহি জানে, আপনার স্বতন্ত্র আসনে আসীন স্বাধীন স্তব্ধাচ্ছবিহে শর্বরী, সেই তব বাক্যহীন জাগ্ৰত সভায় মোরে করি দাও সভাকবি । অনবচ্ছিন্ন আমি আজি মগ্ন হয়েছিনু ব্ৰহ্মাণ্ডমাঝরে ; যখন মেলিনু আঁখি, হেরিনু আমারে । ধরণীর বস্ত্ৰাঞ্চল দেখিলাম তুলি, আমার নাড়ীর কম্পে কম্পমান ধূলি। অনন্ত-আকাশ-তলে দেখিলাম নামি, আলোক-দোলায় বসি দুলিতেছি আমি ।