পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిeం রবীন্দ্র-রচনাবলী অন্নদা। কন্যার বিধবা মা তাকে পশ্চিম থেকে সঙ্গে করে এনেছে। আমি ঘটককে বলে রেখেছি যে ভালো করে মেয়েটির সঙ্গে পরিচয় করে নিয়ে তবে বিবাহের কথা হবে । ” আশু । কিন্তু অন্নদা, শেষকালে বহুবিবাহে প্রবৃত্ত হলে ? ? অন্নদা ! তোমাদের মতো আমি নাম দেখে ভড়কাই নে। যে বহুবিবাহের মধ্যে আর সমস্ত আছে, কেবল বহুটুকুই নেই, তাকে দেখে চমকাও কেন ভাই ? আশু, তবু একটা প্রিন্সিপাল আছে তো ? বহুবিবাহকে বহুবিবাহ বলতেই হবে। ” অন্নদা। আমার নামমাত্র স্ত্রী যেখানে আছে প্রিন্সিপলও সেইখানে আছে। সে স্ত্রীও আসছে না, প্রিন্সিপলও রইল ; অতএব এখন আমি ডঙ্কা মেরে বহুবিবাহ করব, প্রিন্সিপলজুজুকে ডরাব না। রাধাচরণের প্রবেশ - রাধাচরণ ; আশুবাবু! আশু । কী হে রাধে ? রাধাচরণ | সেদিন আপনি আমার সঙ্গে মন্ত্র নিয়ে তর্ক করলেন- এক-একটা শব্দের যে এক-এক প্রকার বিশেষ ক্ষমতা আছে, আমার বােধ হল আপনি যেন তা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেন না। অন্নদা। বল কী রাধে ? তা হলে আশুর অবিশ্বাস করবার ক্ষমতা এখনাে সম্পূর্ণ লোপ হয় নি! এখনো দুটাে-একটা জায়গায় ঠেকছে !- শব্দের মধ্যে শক্তি আছে, এ কথা বাঙালির ছেলে বিশ্বাস করা না ! / ! রাধাচরণ। বলুন তো অন্নদাবাবু! তা হলে মারণ, উচাটন, বশীকরণ- এগুলো কি বেবাক৷ গাঁজাখুরি ! অন্নদা । তাও কি কখনো হয় ? সংসারে কি এত গাজার চাষ হতে পারে ? রাধাচরণ | পশ্চিম থেকে একজন যোগসিদ্ধ মাতাজি ২ এসেছেন । শুনেছি। তিনি মন্ত্রের বল একেবারে প্রত্যক্ষ দেখিয়ে দিতে পারেন। দেখতে গিয়েছিলেম, কিন্তু সকলকে তিনি দেখা দেন না ; বলেছেন, যোগ্য লোক পেলে তাকে তিনি তঁর সমস্ত বিদ্যে দেখিয়ে দেবেন। আশুবাবু, আপনি চেষ্টা করলে নিশ্চয় বিফল হবেন না । , আশু । তিনি থাকেন কোথায় ? রাধাচরণ। বাইশ নম্বর ভেড়াতলায় । । . অন্নদা । বাইশ নম্বরটা উনপঞ্চাশের চেয়ে ভালো হতে পারে, কিন্তু জায়গাটা ভালো ঠেকছে না । একে বশীকরণ-বিদ্যে, তার উপরে ভেড়াতলা। মাতাজির কাছে মুণ্ডুজিটি খুইয়ে এসো না। আশু । আরো ছি!! কী বক তার ঠিক নেই। তঁরা হলেন সাধু স্ত্রীলোক, সেখানে মুগুর ভাবনা ভাবতে হয় না । তুমি বুঝে সুঝে উনপঞ্চাশে পা বাড়িয়ো । অন্নদা । তুমি ভাবিছ বাইশ একেবারেই নির্বিষ। তা নয় হে। বিশের উপরের দুই মাত্ৰা চড়িয়ে তবে, বাইশ । আপাদমস্তক জর্জর হয়ে ফিরবে। ” চতুর্থ অঙ্ক বাইশ নম্বরে কন্যার বিধবা মাতা শ্যামাসুন্দরী শ্যামা। পেলেগ শুনে ভয়ে বীচি নে। তাড়াতাড়ি করে পালিয়ে তো এলুম। কিন্তু অন্নদা বলে ছেলেটির আজ যে সেই উনপঞ্চাশ নম্বরে আসবার কথা আছে, সে কি সেখান থেকে চিনে ঠিক এখানে আসতে পারবে ! এত করে খাওয়াদাওয়ার জোগাড় করলেম, সব মাটি হবে না তাে ! যে তাড়াটা লাগালে, একবার খবর দেবার সময় দিলে না। ঘটক বলেছে, ছেলেটি আমার নিরুপমাকে