পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭৬ রবীন্দ্র-রচনাবলী প্ৰবেশ ঠাকুরদাদা। কী হয়েছে লখাদাদা ? মারমূর্তি কেন ? লক্ষেশ্বর । আরে, দেখো-না ! সকালবেলা কানের কাছে চোঁচাতে আরম্ভ করেছে। ঠাকুরদাদা। আজ যে শরতে ওদের ছুটি, একটু আমোদ করবে না ? গান গাইলেও তোমার কানে খোচা মারে ! হায় রে হায়, ভগবান তোমাকে এত শান্তিও দিচ্ছেন ! লক্ষেশ্বর। গান গাবার বুঝি আর সময় নেই! আমার হিসােব লিখতে ভুল হয়ে যায় যে। আজ আমার সমস্ত দিনটাই মাটি করলে । ঠাকুরদাদা। তা ঠিক । হিসেব ভুলিয়ে দেবার ওস্তাদ ওরা। ওদের সাড়া পেলে আমার বয়সের হিসাবে প্রায় পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন বছরের গরমিল হয়ে যায়।— ওরে বীদরগুলো, আয় তো রে! চল তোদের পঞ্চাননতলার মাঠটা ঘুরিয়ে আনি - যাও দাদা, তোমার দপ্তর নিয়ে বোসো গে। আর হিসেবে ভুল হবে না। ঠাকুরদাদাকে ঘিরিয়া ছেলেদের নৃত্য প্রথম। ই ঠাকুরদাদা, চলো। : ठीिश | उआभाअन्न आछ ?ान्न दल0ठ शद । তৃতীয়। না, গল্প না, বটতলায় বসে আজ ঠাকুর্দার পাঁচালি হবে। চতুর্থ। বটতলায় না, ঠাকুর্দা, আজ পারুলডাঙায় চলো। ঠাকুরদাদা। চুপ, চুপ, চুপ! অমন গোলমাল লাগাস যদি তো লেখাদাদা আবার ছুটে আসবে। য লক্ষেশ্বর। কোন পোড়ারমুখে আমার কলম নিয়েছে রে! [কলম ফেলিয়া দিয়া সকলের প্রস্থান উপনন্দের প্রবেশ লক্ষেশ্বর। কী রে, তোর প্রভু কিছু টাকা পাঠিয়ে দিলে ? অনেক পাওনা বাকি । উপনন্দ । কাল রাত্রে আমার প্রভুর মৃত্যু হয়েছে। লক্ষেশ্বর। মৃত্যু! মৃত্যু হলে চলবে কেন ? আমার টাকাগুলোর কী হবে ? উপনন্দ। র্তার তো কিছুই নেই। যে বীণা বাজিয়ে উপাৰ্জন করে তোমার ঋণ শোধ করতেন সেই বীণাটি আছে মাত্র । লক্ষেশ্বর । বীণাটি আছে মাত্র !! কী শুভসংবাদটাই দিলে ! উপনন্দ । আমি শুভসংবাদ দিতে আসি নি। আমি একদিন পথের ভিক্ষুক ছিলেম, তিনিই আমাকে আশ্রয় দিয়ে তঁর বহু দুঃখের অন্নোর ভাগে আমাকে মানুষ করেছেন। তোমার কাছে দাসত্ব করে আমি সেই মহাত্মার ঋণ শোধ করব । লক্ষেশ্বর। বটে। তাই বুঝি তার অভাবে আমার বহু দুঃখের অন্নে ভাগ বসাবার মতলব করেছ। আমি তত বড়ো গৰ্দভ নই।- আচ্ছা, তুই কী করতে পারিস বল দেখি । - উপনন্দ । আমি চিত্ৰবিচিত্র করে পুঁথি নকল করতে পারি। তোমার অন্ন আমি চাই নে। আমি নিজে উপার্জন করে যা পারি খাব- তোমার ঋণও শোধ করব । লক্ষেশ্বর । আমাদের বীনকারটিও যেমন নির্বোধি ছিল ছেলেটাকেও দেখছি ঠিক তেমনি করেই বানিয়ে গেছে। হতভাগা ছোড়াটা পরের দায় ঘাড়ে নিয়েই মরবে। এক-এক জনের ঐরকম মারাই স্বভাব। — আচ্ছা বেশ, মাসের ঠিক তিন তারিখের মধ্যেই নিয়মমত টাকা দিতে হবে। নইলেউপনন্দ। নইলে আবার কী ! আমাকে ভয় দেখাচ্ছে মিছে। আমার কী আছে যে তুমি আমার কিছু