পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\S)\V রবীন্দ্র-রচনাবলী লোহার শৃঙ্খলে বাধা যেথা বজাসেন মৃত্যুর প্রভাত চেয়ে মীেনী জপিছেন ইষ্টনাম । রমণীর কটাক্ষ-ইঙ্গিতে রক্ষী আসি খুলি দিল শৃঙ্খল চকিতে । বিস্ময়বিহবল নেত্ৰে বন্দী নিরাখিল সেই শুভ্ৰ সুকোমল কমল-উল্মীল অপরূপ মুখ | কহিল গদগদম্বরে করধূত শুকতারা শুভ্ৰ উষা-সম কে তুমি উদিলে আসি কারাকক্ষে মম— মুমূর্য্যর প্রাণরূপা, মুক্তিরূপা অয়ি, নিষ্ঠুর নগরী-মাঝে লক্ষ্মী দয়াময়ী : “আমি দয়াময়ী !” রমণীর উচ্চহাসে । ভয়ংকর কারাগার । হাসিতে হাসিতে উন্মত্ত উৎকট হাস্য শোক শ্রীরাশিতে শতধা পড়িল ভাঙি । কঁদিয়া কহিলা, “এ পুরীর পথমাঝে যত আছে শিলা কঠিন শ্যামার মতো কেহ নাহি আর ' এত বলি দৃঢ়বলে ধরি হস্ত তার বজাসেনে লয়ে গেল। কারার বাহিরে । তখন জাগিছে। উষা, বরুণার তীরে পূর্ব বানান্তরে । ঘাটে বাধা আছে তরী । 'হে বিদেশী, এসো এসো কহিল সুন্দরী দাড়িয়ে নীেকার পরে, “ হে আমার প্রিয়, " শুধু এই কথা মোর স্মরণে রাখিয়ো--- তোমা-সাথে এক স্রোতে ভাসিলাম আমি সকল বন্ধন টুটি হে হৃদয়স্বামী, জীবনমরণপ্ৰভু ! নৌকা দিল খুলি । দুই তীরে বনে বনে গাহে পাখিগুলি আনন্দ-উৎসব-গান । প্ৰেয়সীর মুখ বজাসেন শুধাইল, “কহাে মোরে প্ৰিয়ে, আমারে করেছ মুক্ত কী সম্পদ দিয়ে । সম্পূর্ণ জানিতে চাহি অয়ি বিদেশিনী, এ দীনদরিদ্রজন তব কাছে ঋণী কত ঋণে ।’ আলিঙ্গন ঘনতর করি “সে কথা এখন নহে কহিল সুন্দরী ।