পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথা। শুধালেন সনাতন, * কোথা হতে আগমন, বিপ্ৰ কহে, “কিবা কব, পেয়েছি দৰ্শন তব ভ্ৰমি বহুদূর । জীবন আমার নাম, মানকরে মোর ধাম, জিলা বর্ধমানেএতবড়ো ভাগ্যহত দীনহীন মোর মতো নাই কোনোখানে । জমিজমা আছে কিছু, করে আছি মাথা নিচু, অল্পস্বল্প পাই । ক্রিয়াকম-যজ্ঞযাগে বহু খ্যাতি ছিল আগে, আজ কিছু নাই । আপনি উন্নতি লাগি শিব-কাছে বর মাগি করি আরাধনা ৷ একদিন নিশিভোরে স্বপ্নে দেব কন মোরে—— পুরিবে প্রার্থনা— যাও যমুনার তীর, সনাতন গোস্বামীর ধরে দুটি পায় ! তঁতারে পিতা বলি মেনো, তারি হাতে আছে জেনো ধনের উপায় ।” শুনি কথা সনাতন ভাবিয়া আকুল হন— ‘কী আছে আমার ! যাহা ছিল সে সকলি ফেলিয়া এসেছি চলি ভিক্ষামাত্র সারা ।” সহসা বিস্মৃতি ছুটে, সাধু ফুকারিয়া উঠে, “ঠিক বটে ঠিক । একদিন নদীতটে কুড়ায়ে পেয়েছি বটে পরশমানিক । যদি কভু লাগে দানে সেই ভেবে ওইখানে নিয়ে যাও হে ঠাকুর, দুঃখ তব হবে দূর বিপ্ৰ তাড়াতাড়ি আসি খুঁড়িয়া বালুকারাশি পাইল সে মণি, । লোহার মাদুলি দুটি সোনা হয়ে উঠে ফুটি, ছুইল যেমনি । ব্ৰাহ্মণ বালুর পরে বিস্ময়ে বসিয়া পড়ে— ভাবে নিজে নিজে । যমুনা কল্লোলাগানে চিন্তিতের কানে কানে কহে কত কী যে !