পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথা। রে। পাঠান, পিতার সুপুত্র হও যদি খোলো তরবার— পিতৃঘাতকেরে বধি উষ্ণও রক্ত-উপহারে করিবে তপণ তৃষাতুর প্ৰেতাত্মার ।” বাঘের মতন পড়িল গুরুর পরে ; গুরু রহে স্থির তখনি চরণে তার পড়িল পাঠান । কহিল, “ হে গুরুদেব, লয়ে শয়তানে কোরো না। এমনতরো খেলা ৷ ধৰ্ম জানে পিতা গুরু বন্ধু বলে জেনেছি তোমারে এতদিন । ছেয়ে থাক মনে সেই স্নেহ, ঢাকা পড়ে হিংসা যাক মারে | প্ৰভু, দেহে পদধূলি ।” এত বলি বনের বাহিরে উধৰ্বশ্বাসে ছুটে গেল, না চাহিল ফিরে, না থামিল একবার । দুটি বিন্দু জল ভিজাইল গোবিন্দের নয়নযুগল । পাঠান সেদিন হতে থাকে দূরে দূরে । নিরালা শয়নঘরে জাগাতে গুরুরে দেখা নাহি দেয় ভোরবেলা ৷ গাহদারে অস্ত্ৰ হাতে নাহি থাকে রাতে । নদী পারে গুরু-সাথে মৃগয়ায় নাহি যায় একা । নির্জনে ডাকিলে গুরু দেয় না। সে দেখা । একদিন আরম্ভিল শতরঞ্চি খেলা গোবিন্দ পাঠান-সাথে । শেষ হল বেলা না জানিতে কেহ । হার মানি বারে বারে মাতিছে মামুদ । সন্ধ্যা হয়, রাত্ৰি বাড়ে । সঙ্গীরা যে যার ঘরে চলে গেল ফিরে । বঁথা বঁথা করে রাতি । একমনে হেটশিরে পাঠান ভাবিছে খেলা । কখন হঠাৎ চতুরঙ্গ বল ছুড়ি করিল আঘাত মামুদের শিরে গুরু ; কহে অট্টহাসি, “পিতৃঘাতকের সাথে খেলা করে আসি এমন যে কাপুরুষ, জয় হবে তার !” তখনি বিদ্যুৎ-হেন ছুরি খরধার খাপ হতে খুলি লয়ে গোবিন্দের বুকে পাঠান বিধিয়া দিল । গুরু হাসিমুখে VG