পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথা ডাহিন হাতে বহে ফাগের থারি, বামহস্তে গুলাবি-ভরা বার সারি সারি রাজপুতানী আসে । পায়ে পায়ে ঘাগরা উঠে দুলে, ওড়না ওড়ে দক্ষিনে বাতাসে । আঁখির ঠারে চতুর হাসি হেসে কোসর তবে কহে কাছে আসি,

  • বেঁচে এলেম অনেক যুদ্ধ করি,

আজকে বুঝি জানে-প্ৰাণে মারি !” শুনে রানীর শতেক সহচরী হঠাৎ সবে উঠল অট্টহাসি । রাঙা পাগডি হেলিয়ে কেসির খা রঙ্গভরে সেলাম করে আসি । শুরু হল হোরির মাতামতি, উড়তেছে। ফাগ রাঙা সন্ধ্যাকাশে । নব বরন ধরল। বকুল ফুলে, রক্তরেণু ঝরল তরুমূলে— ভয়ে পাখি কুজন গেল ভুলে রাজপুতানীর উচ্চ উপহাসে । কোথা হতে রাঙা কুজ্বাটিকা লাগল যেন রাঙা সন্ধ্যাকাশে । চোখে কেন লাগছে নাকো নেশা মনে মনে ভাবছে কেসির খা । বক্ষ কেন উঠছে নাকে দুলি, নারীর পায়ে বাকা নুপুরগুলি কেমন যেন বলছে বেসুর বুলি, তেমন ক’রে কাকন বাজছে না ! চোখে কেন লাগছে নাকো নেশা মনে মনে ভাবছে কেসির খা । পাঠান কহে, ‘রাজপুতানীর দেহে কোথাও কিছু নাই কি কোমলতা ! বাহুযুগল নয় মৃণালের মতো, কণ্ঠস্বরে বীজ লজাহত— বড়ো কঠিন শুষ্ক স্বাধীন যত মঞ্জরীহীন মরুভূমির লতা ।” পাঠান ভাবে দেহে কিংবা মনে রাজপুতানীর নাইকো কোমলতা । \cofio