পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

brbr রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ধিক ধিক ওরে, শত ধিক তোরে, নিলাজ কুলটা ভূমি ! যখনি যাহার তখনি তাহার, এই কি জননী তুমি ! সে কি মনে হবে একদিন যবে ছিলে দরিদ্রমাতা আঁচল ভরিয়া রাখিতে ধরিয়া ফল ফুল শাক পাতা ! আজ কোন রাতে কারে ভুলাইতে ধরেছ বিলাসবেশ— পাচরঙা পাতা অঞ্চলে গাথা, পুষ্পে খচিত কেশ । আমি তোর লাগি ফিরেছি। বিবাগি গৃহহারা সুখহীন— তুই হেথা বসি ওরে রাক্ষসী, হাসিয়া কাটাস দিন । ধনীর আদরে গরব না ধরে !! এতই হয়েছ ভিন্ন কোনোখানে লেশ নাহি অবশেষ সেদিনের কোনো চিহ্ন ! কল্যাণময়ী ছিলে তুমি আয়ি, ক্ষুধাহরা সুধারাশি ! যত হাসো আজ যত করো সাজ ছিলে দেবী, হলে দাসী । প্রাচীরের কাছে এখনো যে আছে, সেই আমগাছ, একি ! বসি তার তলে নয়নের জলে শান্ত হইল ব্যথা, একে একে মনে উদিল স্মরণে বালক-কালের কথা । অতি ভোরে উঠি তাড়াতাড়ি ছুটি আম কুড়াবার ধূম | সেই সুমধুর স্তব্ধ দুপুর, পাঠশালা-পলায়ন— ভাবিলাম হায় আর কি কোথায় ফিরে পাব সে জীবন ! সহসা বাতাস ফেলি গেল শ্বাস শাখা দুলাইয়া গাছে, দুটি পাকা ফল লভিল ভূতল আমার কোলের কাছে { ভাবিলাম মনে বুঝি এতখনে আমারে চিনিল মাতা, মেহের সে দানে বহু সম্মানে ব্যারেক ঠেকান মাথা । হেনকালে হায় যমদূত-প্রায় কোথা হতে এল মালী, কুঁটি-বাধা উড়ে সপ্তম সুরে পাড়িতে লাগিল গালি । কহিলাম। তবে, ‘আমি তো নীরবে দিয়েছি আমার সব—— দুটি ফল তার করি অধিকার, এত তারি কলরব ! চিনিল না মোরে, নিয়ে গেল ধরে কাধে তুলি লাঠিগাছ— বাবু ছিপ হাতে পারিষদ-সাথে ধরিতেছিলেন মাছ । শুনি বিবরণ ক্ৰোধে তিনি কন, মারিয়া করিব খুন ! বাবু যত বলে পারিষদ-দলে বলে তার শতগুণ । আমি কহিলাম, ‘শুধু দুটি আম ভিখ মাগি মহাশয় !" বাবু কহে হেসে, “বেটা সাধুবেশে পাকা চোর অতিশয় ।” আমি শুনে হাসি আঁখিজলে ভাসি, এই ছিল মোর ঘটে— তুমি মহারাজ। সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে ! こ> リー所あ>このミ