পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী قیوچR তোমার এই কনিষ্ঠটিকে, মহারাজ চক্রবর্তীকে জাহাপনা জনাব বলিয়া না ডাকিলে উহার অপমান বোধ হয়।” বলিয়া আবার তীরের ফলা লইয়া পড়িলেন। “সত্য নাকি ৷” বলিয়া ইন্দ্রকুমার হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিলেন। রাজধর বিষম ক্রোধে বলিলেন, "চুপ করে দাদা।” ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “রাজধর, তোমাকে কী বলিয়া ভাকিতে হইবে। জাহাপন । झीं झ झ] झीं ।” রাজধর কাপিতে কঁাপিতে বলিলেন, "দাদা, চুপ করে বলিতেছি।” ইন্দ্রকুমার আবার হাসিয়া বলিলেন, “জনাব ।” রাজধর অধীর হইয়া বলিলেন, "দাদা, তুমি নিতান্ত নিবোধ ।” ইন্দ্রকুমার হাসিয়া রাজধরের পৃষ্ঠে হাত বুলাইয়া বলিলেন, “ঠাগু হও ভাই, ঠাণ্ড হও । তোমার বুদ্ধি তোমার থাক। আমি তোমার বুদ্ধি কাড়িয়া লইতেছি না।” ইশা খা কাজ করিতে করিতে আড়চোখে চাহিয়া ঈষৎ হাসিয়া বলিলেন, “উহার বুদ্ধি সম্প্রতি অত্যন্ত বাড়িয়া উঠিয়াছে।” ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “নাগাল পাওয়া যায় না।” রাজধর গসগল করিয়া চলিয়া গেলেন । চলনের দাপে খাপের মধ্যে তলোয়ারখানা ঝনঝন করিতে লাগিল । দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ রাজকুমার রাজধরের বয়স উনিশ বৎসর। শু্যামবর্ণ, বেঁটে, দেহের গঠন বলিষ্ঠ । সেকালে অন্ত রাজপুত্রেরা যেমন বড়ো বড়ে চুল রাখিতেন ইহার তেমন ছিল না। ইহার সোজা সোজা মোটা চুল ছোটাে করিয়া ছাট। ছোটাে ছোটো চোখ, তীক্ষ দৃষ্টি । দাতগুলি কিছু বড়ো । গলার আওয়াজ ছেলেবেল হইতেই কেমন কর্কশ। রাজধরের বুদ্ধি অত্যন্ত বেশি এইরূপ সকলের বিশ্বাস, তাহার নিজের বিশ্বাসও তাই। এই বুদ্ধির বলে তিনি আপনার দুই দাদাকে অত্যন্ত ছেয়জ্ঞান করিতেন । রাজধরের প্রবল প্রতাপে বাড়িমৃদ্ধ সকলে অস্থির। আবগুক থা না থাৰু একখানা তলোয়ার মাটিতে ঠুকিয়া কিয়া তিনি বাড়িময় কতৃপ্ত করিয়া বেড়ান। রাজবাটীর চাকরবাকরেরা র্তাহাকে রাজা বলিয়া মহারাজ বলিয়া হাতজোড় করিয়া সেলাম করিয়া প্রণাম করিয়া কিছুতে নিস্তার পায় না। সকল জিনিসেই উহার হাত, সকল জিনিসই তিনি নিজে দখল করিতে চান। সে-বিষয়ে তাহার চক্ষুলজাটুকু পর্যন্ত নাই। একবার যুবরাজ