পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ন্তিনিকেতন ♥9●ዊ অন্তঃকরণ যখন ভাবকে গ্রহণ করবার জন্তে প্রস্তুত থাকে না তখন শ্রদ্ধাহীন শ্রোতার কাছে কথাগুলি তার সমস্ত অর্থ টা উদঘাটিত করে দেয় না। অধ্যামন্ত্রকে ৰখন সাহিত্য-সমালোচকের কান দিয়ে গুনেছি তখন সাহিত্যের দিক দিয়েও তার ঠিক বিচার করতে পারি নি । আমি সেজন্তে অভুতপ্ত নই বরঞ্চ জানন্দিত। মূল্যবান জিনিসকে তখনই লাভ করা সৌভাগ্য যখন তার মূল্য বোঝবার শক্তি কিছু পরিমাণে হয়েছে—যথার্থ অভাবের পূর্বে পেলে পাওয়ার আনন্দ ও সফলতা থেকে বঞ্চিত হতে হয়। পূর্বে আমি দেখতে পাই নি যে এই মন্ত্রের দুটি ছত্রে দুটি ক্রিয়াপদ প্রধান স্থান অধিকার করে আছে। একটি হচ্ছে পর্যগাৎ—তিনি সর্বত্রই গিয়েছেন সর্বত্রই আছেন। আর একটি হচ্ছে ব্যদধাং—তিনি সমস্তই করেছেন । এই মন্ত্রের এক অধে তিনি আছেন, অন্ত অধে তিনি করছেন । যেখানে আছেন সেখানে ক্লীবলিঙ্গ বিশেষণ-পদ, যেখানে করছেন সেখানে পুংলিঙ্গ বিশেষণ। অতএব বাহুল্য কোনো কথা না বলে একটি ব্যাকরণের ইঙ্গিতের দ্বারা এই মন্ত্র একটি গভীর সার্থকতা লাভ করেছে । # তিনি সর্বত্র আছেন কেননা তিনি মুক্ত তার কোথাও কোনো বাধা নেই। না আছে শরীরের বাধা, না আছে পাপের বাধা। তিনি আছেন এই ধ্যানটিকে সম্পূর্ণ করতে গেলে তার সেই মুক্ত বিশুদ্ধ স্বরূপকে মনে উজ্জল করে দেখতে হয়। তিনি যে কিছুতেই বদ্ধ নন এইটিই সর্বব্যাপিত্বের লক্ষণ । শরীর ধার আছে সে সর্বত্র নেই। শুধু সর্বত্র নেই তা নয় সে সর্বত্র নির্বিকারভাবে থাকতে পারে না কারণ শরীরের ধর্মই বিকার। তার শরীর নেই সুতরাং তিনি নির্বিকার, তিনি অত্রণ। যার শরীর আছে সে ব্যক্তি স্নায়ু প্রভৃতির সাহায্যে নিজের প্রয়োজন সাধন করে—সে রকম সাহায্য তার পক্ষে সম্পূর্ণ অনাবশ্বক। শরীর নেই বলার দরুন কী বলা হল তা ওই অত্রণ ও অক্ষাবির বিশেষণের দ্বারা ব্যক্ত করা হয়েছে—তার শারীরিক সীমা নেই স্বতরাং তার বিকার নেই এবং খণ্ডভাবে খণ্ড উপকরণের দ্বারা তাকে কাজ করতে হয় না। তিনি শুদ্ধং অপাপবিদ্ধং—কোনো প্রকার পাপ প্রবৃত্তি তাকে একদিকে হেলিয়ে একদিকে বেঁধে রাখে না। জুতরাং তিনি সর্বত্রই সম্পূর্ণ সমান। এই তো গেল—স পর্বগাং। তার পরে—স ব্যঙ্গধাং ; যেমন অনন্ত দেশে তিনি পর্বগাৎ তেমনি অনস্তকালে তিনি ব্যঙ্গধাং । ব্যদধাং শাশ্বতীভাঃ সমাভ্য: নিত্য কাল হতে বিধান করেছেন এবং নিত্য কালের জন্য বিধান করছেন। সে বিধান কিছুমাত্র এলোমেলো নয়—