পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(r নবযুগের উৎসব নিজের অসম্পূর্ণতার মধ্যে সম্পূর্ণ সত্যকে আবিষ্কার করতে সময় লাগে। আমরা ৰে যথার্থ কী, আমরা যে কী করছি, তার পরিণাম কী, তার তাৎপর্য কী সেইটি স্পষ্ট বোঝা नश्छ कथां नग्न । বালক নিজেকে ঘরের ছেলে বলেই জানে। তার ঘরের সম্বন্ধকেই সে চরম সম্বন্ধ বলে জ্ঞান করে । সে জানে না সে ঘরের চেয়ে অনেক বড়ো । সে জানে না মানবজীবনে সকলের চেয়ে বড়ো সম্বন্ধ তার ঘরের বাইরেই। সে মানুষ স্বতরাং সে সমস্ত মানবের । সে যদি ফল হয় তবে তার বাপ মা কেবল বুস্তমাত্র ; সমস্ত মানববৃক্ষের সঙ্গে একেবারে শিকড় থেকে ডাল পর্যন্ত তার মজ্জাগত যোগ । কিন্তু সে যে একান্তভাবে ঘরেরই নয়, সে যে মাহষ, এ-কথা শিশু অনেকদিন পর্যন্ত একেবারেই জানে না। তবু এ-কথা একদিন তাকে জানতেই হবে যে ঘর তাকে ঘরের মধ্যেই সম্পূর্ণ আত্মসাৎ করবার জন্তে পালন করছে না, সে মানবসমাজের জন্তেই বেড়ে উঠছে। আমরা আজ পঞ্চাশবংসরের উধ্বকাল এই ১১ই মাঘের উৎসব করে আসছি। আমরা কী করছি, এ উংসব কিসের উৎসব, সে-কথা আমাদের বোঝবার সময় হয়েছে ; আর বিলম্ব করলে চলবে না । আমরা মনে করেছিলুম আমাদের এই উৎসব ব্রাহ্মসমাজের উৎসব। ব্রাহ্মসম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের সংবৎসরের ক্লাস্তি ও অবসাদকে উংসবের আনন্দে বিসর্জন দেবেন, তাদের ক্ষয়গ্রস্ত জীবনের ক্ষতিপূরণ করবেন, প্রতিদিনের সঞ্চিত মলিনত ধৌত করে নেবেন, মহোৎসবক্ষেত্রে চিরনবীনতার ষে অমৃত-উৎস আছে তারই জল পান করবেন এবং তাতেই স্নান করে নবজীবনে সন্তোজাত শিশুর মতো প্রফুল্প হয়ে উঠবেন। এই লাভ এই আনন্দ ব্রাহ্মসমাজ উৎসবের থেকে গ্রহণ যদি করতে পারেন তবে ব্ৰাহ্মসম্প্রদায় ধন্ত হবেন কিন্তু এইটুকুতেই উৎসবের শেষ পরিচয় আমরা লাভ করতে পারি নে। আমাদের এই উৎসব ব্রাহ্মসমাজের চেয়ে অনেক বড়ো এমন কি, একে দি ভারতবর্ষের উৎসৰ বলি তাহলেও একে ছোটাে করা হবে।