পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

egbo ब्ररोौटा-ब्रक्रमांबलौ দাড়িয়ে কেবল এই কথাটি বলে যাবার জন্তে তোমাদের সংসার ফেলে চলে আসতে হবে। কেবল সেইটুকু সময় থাক তোমাদের কাজকর্ম, থাকৃ তোমাদের আমোদপ্রমোদ । আর সমস্ত কথার উপরে এই কথাটি বলে যাও-পিতা নোহসি । তার জগৎসংসারের কোলে জন্মে, তার চন্দ্রসুর্যের আলোর মধ্যে চোখ মেলে জাগরণের প্রথম মুহূর্তে এই কথাটি তোমাদের জোড়হাতে প্রত্যহ বলে যেতে হবে : ওঁ পিতা নোহসি। এ আমি তোমাদের জোর করেই বলে রাখছি। এত বড়ো বিশ্বে এবং এমন মহৎ মানবজীবনে তাকে কোনো জায়গাতেই একটুও স্বীকার করবে ন+— এ তে কিছুতেই হতে পারবে না। তোমার অপরিস্ফুট চেতনাকেও উপহার দাও, তোমার শূন্ত হৃদয়কেও দান করে, তোমার শুষ্কতা রিক্ততাকেই তার সম্মুখে ধরে, তোমার স্থগভীর দৈন্তকেই তার কাছে নিবেদন করো। তাহলেই ষে দয়া অযাচিতভাবে প্রতিমুহূর্তেই তোমার উপরে বর্ষিত হচ্ছে সেই দয়া ক্রমশই উপলব্ধি করতে থাকবে। এবং প্রত্যহ ওই যে অল্প একটু বাতায়ন খুলবে সেইটুকু দিয়েই অন্তৰ্বামীর প্রেমমুখের প্রসন্ন হাস্ত প্রত্যহই তোমার অন্তরকে জ্যোতিতে অভিষিক্ত করতে থাকবে। ১৩ ফাঙ্কন প্রার্থনা হে সত্য, আমার এই অন্তরাত্মার মধ্যেই যে তুমি অন্তহীন সত্য—তুমি আছ । এই আত্মায় তুমি যে আছ, দেশে কালে গভীরতায় নিবিড়তায় তার আর সীমা নাই। এই আত্মা অনস্তকাল এই মন্ত্রটি বলে আসছে—সত্যং । তুমি আছ, তুমিই আছ। আত্মার অতলম্পর্শ গভীরতা হতে এই যে মন্ত্রটি উঠছে, তা যেন আমার মনের এবং সংসারের অন্যান্ত সমস্ত শব্দকে ভরে সকলের উপরে জেগে ওঠে—সত্যং সত্যং সত্যং। সেই সত্যে আমাকে নিয়ে যাও—সেই আমার অন্তরাত্মার গুঢ়তম অনন্ত সত্যে—যেখানে “তুমি আছ” ছাড়া আর কোনো কথাটি নেই। হে জ্যোতিময়, আমার চিদাকাশে তুমি জ্যোতিষাং জ্যোতিঃ । তোমার অনস্ত আকাশের কোটি স্থৰ্যলোকে যে জ্যোতি কুলোয় না, সেই জ্যোতিতে আমার আস্তরাত্মা চৈতন্তে সমুদ্ভাসিত। সেই আমার অন্তরাকাশের মাঝখানে আমাকে দাড় করিয়ে আমাকে আদ্যোপাস্ত প্রদীপ্ত পবিত্রতায় ক্ষালন করে ফেলো, আমাকে জ্যোতির্ময় করে, আমার অন্য সমস্ত পরিবেষ্টনকে সম্পূর্ণ বিশ্বত হয়ে সেই শুভ্ৰ শুদ্ধ অপাপবিদ্ধ জ্যোতিঃশরীরকে লাভ করি।