পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tN98 ब्रबौअ-ब्र5नांवलौ জিনিলের কথাই মনে করে কোনোটাই তার দিতে মন সরে না—যাতে তার অল্পমাত্রও লোভ আছে সেটাও, চিরদিনের মতো দেবার কথায়, মন আকুল করে তুলতে লাগল। শেষকালে বিস্তর ভেবে সে জগন্নাথকে বিলিতি বেগুন দিয়ে এল। এই ফলটিতেই সে লোকের সবচেয়ে কম লোভ ছিল । আমরাও ঈশ্বরের জন্তে কেবলমাত্র সেইটুকুই ছাড়তে চাই যেটুকুতে আমাদের সবচেয়ে কম লোভ-যেটুকু আমাদের নিতান্ত উত্তের উদ্বৃত্ত । ঈশ্বরের নামৰ্গাথা দুটাে একটা মন্ত্র পাঠ করা গেল, দুটি একটি সংগীত শোনা গেল, যারা বেশ ভালো বক্তৃতা করতে পারেন তাদের কাছ থেকে নিয়মিত বক্তৃতা শোনা গেল। বললুম বেশ হল, বেশ লাগল, মনটা এখন বেশ পবিত্র ঠেকছে আমি ঈশ্বরের উপাসনা করলুম। একেই আমরা বলি উপাসনা । যখন বিদ্যার ধনের বা মানুষের উপাসনা করি তখন সেটা এত সহজ উপাসনা হয় না, তখন উপাসনা যে কাকে বলে তা বুঝতে বাকি থাকে না। কেবল ঈশ্বরের উপাসনাটাই হচ্ছে উপাসনার মধ্যে সবচেয়ে ফাকি । এর মানে আর কিছুই নয়, নিজের অংশটাকেই সবচেয়ে বড়ে করে ঘের দিয়ে নিয়ে ঈশ্বরকে একপাই অংশের শরিক করি এবং মনে করি আমার সকল দিক রক্ষা হল । আমাদের দেশে একটা কথা প্রচলিত আছে "যা স্বয়লোকসাধনী তন্থভূতাং সা চাতুরী চাতুরী”—যাতে দুই লোকেরই সাধন হয় মানুষের সেই চাতুরীই চাতুরী । কিন্তু যে-চাতুরী দুইলোক রক্ষার ভার নেয় শেষকালে সে ওই দুই লোকের মধ্যে একটা লোকের কথা ভুলতে থাকে, তার চাতুরী ঘুচে যায়। যে-লোকটি আমার দিকের লোক অধিকাংশ স্থলে সেই দিকের সীমানাই অজ্ঞাতসারে এবং জ্ঞাতসারে বেড়ে চলতে থাকে। ঈশ্বরের জন্তে ওই যে একপাই জমি রেখেছিলুম যদি তাতে কোনো পদার্থ থাকে, যদি সেটা নিতান্তই বালিচাপা মরুভূমি না হয়, তবে একটু একটু করে লাঙল ঠেলে ঠেলে সেটা আত্মসাৎ করে নেবার চেষ্টা করি । “আমি” জিনিসটা যে একটা মস্ত পাথর, তার ভার যে ভয়ানক ভার। ষে-দিকটাতে সেই আমিটাকে চাপাই সেই দিকটাতেই যে ধীরে ধীরে সমস্তটাই কাত হয়ে পড়তে চায়। যদি রক্ষা পেতে চাও তবে ওইটেকেই একেবারে জলের মধ্যে ফেলে দিতে পারলেই ভালো হয় । আসল কথা, সবটাই যদি ঈশ্বরকে দিতে পারি তাহলেই দুইলোক রক্ষা হয়—চাতুরী করতে গেলে হয় না। র্তার মধ্যেই দুই লোক আছে । তার মধ্যেই যদি আমাকে পাই তবে একসঙ্গেই র্তাকেও পাই আমাকেও পাই । আর র্তার সঙ্গে যদি ভাগ বিভাগ করে সীমানা টেনে পাকা দলিল করে নিয়ে কাজ চালাতে চাই তাহলে সেটা একেবারেই পাকা কাজ হয় না, সেটা বিষয়কর্মের নামান্তর হয়। বিষয়কর্মের যে গতি তারও সেই