পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফেরাই। তখন দৃষ্টি থেকে জড়ত্বের আবরণ ঘুচে যায়, জগৎ একটা ধন্ত্রের মতো আমাদের অভ্যাসের কক্ষ জুড়ে পড়ে থাকে না, প্রতিমুহূর্তেই এই অনন্ত আকাশব্যাপী প্রকাও প্রকাশ একটি জ্ঞানময় সত্য হতে নিঃস্থত হচ্ছে বিকীর্ণ হচ্ছে ইহাই অস্থভব করে আমাদের চেতনা পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তখন অগ্নি জল ওষধি বনস্পতির মাঝখানে দাড়িয়ে বলতে পারি, অনন্ত জ্ঞান, অনন্ত ব্ৰক্ষ, সর্বত্রই আনন্দরূপে অমৃতরূপে তার প্রকাশ । \ অগণ্য ঘটনাকে অগণ্য ঘটনারূপে দেখেই চলে যাব নH-তার মাঝখানে অনস্ত সত্যকে স্থির হয়ে স্তব্ধ হয়ে দেখৰ এইজন্তই আমাদের ধ্যানের মন্ত্র গায়ত্ৰী । ওঁ ভূভূকম্ব তৎসবিতুৰ্বরেণ্যং ভর্গে দেবস্ত ধীমহি ধিয়োধোন প্রচোদয়াং । ভূলোক, ভুবলোক, স্বলোক, ইহাই যিনি নিয়ত স্বষ্টি করছেন, সেই দেবতার বরণীয় শক্তিকে ধ্যান করি—যিনি আমাদের ধীশক্তিকেও নিয়ত প্রেরণ করছেন । هدت د ق5ة كا সৃষ্টি এই যে আমরা কয়জন প্রাতঃকালে এইখানে উপাসনা করতে বসি–এও একটি স্বষ্টি । এর মাঝখানেও সেই সবিতা আছেন । আমরা বলে থাকি এটা এইরকম হয়ে উঠেছে । আমরা দু-চার জনে পরামর্শ করলুম, তার পরে একত্র হয়ে বসলুম, তার পক্ষেরোজ রোজ এই রকম চলে আসছে। ঘটনা এই বটে কিন্তু সত্য এই নয়। ঘটনার দিক থেকে দেখলে এ একটি সামান্ত ব্যাপার কিন্তু সত্যের দিক থেকে দেখলে এ বড়ো আশ্চর্ষ প্রতিদিনই আশ্চর্ষ । সত্য মাঝখানে এসে নানা অপরিচিতকে নানা দিক থেকে টেনে এই একটি উপাসনামণ্ডলী নিরস্তর স্বষ্টি করছেন । আমরা মনে করছি আমরা এখানে খানিকক্ষণের জন্তে বসে কাজ সেরে তার পরে অন্ত কাজে চলে গেলুম, ৰাস চুকে গেল—কিন্তু এ তো ছোটাে ব্যাপার নয়। আমরা যখন পড়ছি, পড়াচ্ছি, খাচ্ছি, বেড়াচ্ছি, তখনও এই আমাদের মণ্ডলীটির স্বষ্টিকর্তা এরই স্থষ্টিকার্ষে রয়েছেন। সেই জনানাং হৃদয়ে সন্নিবিষ্ট বিশ্বকর্ম আমাদের মধ্যে কাজ করে চলেছেন, তিনি আমাদের এই কয় জন ভিন্ন ভিন্ন লোকের মনে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে এর উপকরণ সাজিয়ে তুলেছেন। তার ক্ষেন আর অন্ত কোনো কাজ নেই, বিশ্বস্বটি উার যত বড়ো কাজ এও যেন তার তত বড়োই কাজ। আমাদের এই উপাসনালোকটি কেবলই হচ্ছে, হচ্ছে, হয়ে উঠছে—দিনরাত, দিনরাত। আমরা