পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 edy ब्रदौटअ-ब्रकनांवली স্বভাবলাভ মাহুষের এক দিন ছিল যখন, সে যেখানে কিছু অদ্ভূত দেখত সেইখানে ঈশ্বরের কল্পনা করত। যদি দেখলে কোথাও জলের থেকে আগুন উঠছে আমনি সেখানে পূজার আয়োজন করত। তখন সে কোনো একটা আসামান্ত লক্ষণ দেখে বা কল্পনা করে বলত, অমুক মাহুষে দেবতা ভর করেছেন, অমুক গাছে দেবতার আবির্ভাব হয়েছে, অমুক মূর্তিতে দেবতা জাগ্রত হয়ে আছেন। ক্রমে অখণ্ড বিশ্বনিয়মকে চরাচরে যখন সর্বত্র এক বলে দেখবার শিক্ষা মামুষের হল তখন সে জানতে পারল যে, যাকে অসামান্ত বলে মনে হয়েছিল সেও সামান্ত নিয়ম হতে ভ্ৰষ্ট নয়। তখনই ব্রহ্মের আবির্ভাবকে অখণ্ডভাবে সর্বত্র ব্যাপ্ত করে দেখবার অধিকার সে লাভ করল। এবং সেই বিরাট অবিচ্ছিন্ন ঐক্যের ধারণায় সে আনন্দ ও আশ্রয় পেল। তখনই মানুষের জ্ঞান প্রেম কর্ম মোহমুক্ত হয়ে প্রশস্ত এবং প্রসন্ন হয়ে উঠল। তার ধর্ম থেকে সমাজ থেকে রাজ্য থেকে মূঢ়তা ক্ষুদ্রতা দূর হতে লাগল । এই দেখা হচ্ছে ব্ৰহ্মকে সর্বত্র দেখা, স্বভাবে দেখা । কিন্তু সমস্ত স্বভাব থেকে চুরি করে এনে তাকে স্বেচ্ছাপূর্বক কোনো একটা কৃত্রিমতার মধ্যে বিশেষ করে দেখবার চেষ্টা এখনও মানুষের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। এমন কি কেউ কেউ স্পর্ধা কবে বলেন সেইরকম করে দেখাই হচ্ছে প্রকৃষ্ট দেখা । সব রূপ হতে ছাড়িয়ে একটি কোনো বিশেষরূপে, সব মানুষ হতে সরিয়ে একটি কোনো বিশেষ মামুষে ঈশ্বরকে পূজা করাই তারা বলেন পূজার চরম। জানি, মানুষ এরকম কৃত্রিম উপায়ে কোনো একটা হৃদয়বৃত্তিকে অতিপরিমাণে বিক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে, কোনো একটা রসকে অত্যন্ত তীব্র করে দাড় করাতে পারে। কিন্তু সেইটে করাই কি সাধনার লক্ষ্য ? অনেক সময় দেখা যায় অন্ধ হলে স্পর্শশক্তি অতিরিক্ত বেড়ে যায় । কিন্তু সেইরকম একদিকের চুরির দ্বারা অন্যদিককে উপচিয়ে তোলাকেই কি বলে শক্তির সার্থকতা ? যেদিকটা নষ্ট হল সেদিকটার হিসাব কি দেখতে হবে না ? সেদিকের দও হতে কি আমরা নিষ্কৃতি পাব ? কোনোপ্রকার বাহ ও সংকীর্ণ উপায়ের দ্বারা সম্মোহনকে মেসমেরিজিমকে ধর্মসাধনার প্রধান অঙ্গ করে তুললে আমাদের চিত্ত স্বাস্থ্য থেকে স্বভাব থেকে স্বতরাং