পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাভিনিকেতন 행e মঙ্গল থেকে বিচু্যত হবেই হবে। আমরা ওজন হারাব—জামরা যেদিকটাতে এইরকম অসংগত ঝোক দেব সেইদিকটাকেই বিপর্যন্ত করে দেব। বস্তুত স্বভাবের পরিপূর্ণতাকে লাভ করাই ধর্ম ও ধর্মনীতির শ্রেষ্ঠ লাভ। মাহুৰ নানা কারণে তার স্বভাবের ওজন রাখতে পারে না, সে সামঞ্জত হারিয়ে ক্ষেলে—এই তো তার পাপের মূল এবং ধর্মনীতি তে। এইজন্তই তাকে সংঘমে প্রবৃত্ত করে । এই সংঘমের কাজটা কী ? প্রবৃত্তিকে উয়ল করা নয় প্রবৃত্তিকে নিয়মিত করা। কোনো একটা প্রবৃত্তি যখন বিশেষরূপ প্রশ্ৰয় পেয়ে স্বভাবের সামঞ্জস্তকে পীড়িত করে তখনই পাপের উৎপত্তি হয়। অর্জনস্পৃহা ৰখন অত্যন্ত উগ্র হয়ে উঠে টাকা জর্জনের দিকেই মানুষের শক্তিকে একান্ত বাধতে চায় তখনই সেটা লোভ হয়ে দাড়ায়। তখনই সে মাহুষের চিত্তকে তার সমস্ত স্বাভাবিক দিক থেকে চুরি করে এই দিকেই জড়ো করে । এই প্রকারে স্বভাব থেকে যে-ব্যক্তি ভ্ৰষ্ট হয় সে কখনোই যথার্থ মঙ্গলকে পায় না মুতরাং ঈশ্বরকে লাভ তার পক্ষে অসাধ্য। কোনো মামুষের প্রতি অনুরাগ যখন স্বভাব থেকে আমাদের বিচুত করে তখনই তা কাম হয়ে ওঠে। সেই কাম আমাদের ঈশ্বরলাভের বাধা । : এইজন্ত সামঞ্জস্ত থেকে বিকৃতি থেকে মামুষের চিত্তকে স্বভাবে উদ্ধার করাই হচ্ছে ধর্মনীতির একান্ত চেষ্টা । 朝 উপনিষদে ঈশ্বরকে সর্বব্যাপী বলবার সময় যখন তাকে অপাপবিদ্ধ বলা হয়েছে তখন তার তাৎপর্য এই । তিনি স্বভাবে অবাধে পরিব্যাপ্ত। পাপ তাকে কোনো একটা বিশেষ সংকীর্ণতায় আকৃষ্ট আবদ্ধ করে অন্যত্র থেকে পরিহরণ করে নেয় না—এই গুণেই তিনি সর্বব্যাপী। আমাদের মধ্যে পাপ সমগ্রের ক্ষতি করে কোনো একটাকেই স্ফীত করতে থাকে। তাতে করে কেবল ষে নিজের স্বভাবের মধ্যে নিজের সামঞ্জস্ত থাকে না তা নয়, চারিদিকের সঙ্গে সমাজের সঙ্গে আমাদের সামঞ্জস্ত নষ্ট হয়ে ৰায় । ধর্মনীতিতে আমরা এই যে স্বভাৰলাভের সাধনায় প্রবৃত্ত আছি, সমাজ এবং নীতিশাস্ত্র এজন্তে দিনরাত তাড়না করছে । এইখানেই কি এর শেষ ? ঈশ্বরসাধনাতেও কি এই নিয়মের স্থান নেই ? সেখানেও কি আমরা কোনো একটি ভাবকে কোনো একটি রসকে সংকীর্ণ অবলম্বনের দ্বারা অতিমাত্র আন্দোলিত করে তোলাকেই মানুষের একটি চরম লাভ বলে গণ্য করব ? . n স্থর্বলের মনে একটা উত্তেজনা জাগিয়ে তার হৃদয়কে প্রলুদ্ধ করবার জন্যে এই সকল উপায়ের প্রয়োজন এমন কৰা অনেকে বলেন । । ষে লোক মদ খেয়ে জানন্দ পায় তার সম্বন্ধে কি আমরা ওইরূপ তর্ক করতে পারি ? 》8||