পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘888 ধ্ৰুৰীক্স-রচনাবলী নিজের দিকে নয়, কেবলই সেই ভূষার দিকে, প্রেয়ের দিকে, অমৃতের দিকে। সমূত্রে নদীর মতো তার সঙ্গে মিলিত হও—তাহলে তোমার সমস্ত সত্তার ধারা কেবলই তিনিময় হতে থাকবে, কেবলই তুমি ব্ৰহ্ম হয়ে উঠৰে । তাহলে তুমি তোমার সমস্ত জীবন দিয়ে সমস্ত অস্তিত্ব দিয়ে জানতে পারবে ব্ৰহ্মই তোমার পরম গতি, পরমা সম্পৎ, পরম আশ্রয়, পরম আনন্দ, কেননা তাতেই তোমার পরম হওয়া । ও বৈশাখ মুক্তি এই ষে সকালবেলাটি প্রতিদিন আমাদের কাছে প্রকাশিত হয় এতে আমাদের আনন্দ অল্পই। এই সকলে আমাদের অভ্যাসের দ্বারা জীর্ণ হয়ে গেছে। অভ্যাস আমাদের নিজের মনের তুচ্ছত দ্বারা সকল মহৎ জিনিসকেই তুচ্ছ করে দেয়। সে নাকি নিজে বন্ধ এইজন্তে সে সমস্ত জিনিসকেই বদ্ধ করে দেয়। আমরা যখন বিদেশে বেড়াতে যাই তখন কোনো নূতন পৃথিবীকে দেখতে যাই নে। এই মাটি এই জল এই আকাশকেই আমাদের অভ্যাস থেকে বিমুক্ত করে দেখতে যাই। আবরণটাকে ঘুচিয়ে এই পৃথিবীর উপরে চোখ মেললেই এই চিরদিনের পৃথিবীতেই সেই অভাবনীয়কে দেখতে পাই যিনি কোনোদিন পুরাতন নন। তখনই আনন্দ পাই। যে আমাদের প্রিয়, অভ্যাস তাকে সহজে বেষ্টন করতে পারে না । এইজগুই প্রিয়জন চিরদিনই অভাবনীয়কে অনস্তকে আমাদের কাছে প্রকাশ করতে পারে। তাকে যে আমরা দেখি সেই দেখাতেই আমাদের দেখা শেষ হয় না—লে আমাদের দেখা শোনা আমাদের সমস্ত বোধকেই ছাড়িয়ে বাকি থাকে। এইজন্যেই ভাঙে আমাদের আনন্দ । i | তাই উপনিষৎ—আনন্দরূপমমৃতং—ঈশ্বরের আনন্দরূপকে অমৃত বলেছেন । আমাদের কাছে যা মরে যায় যা ফুরিয়ে যায় তাতে আমাদের আনন্দ নেই—যেখানে আমরা সীমার মধ্যে অসীমকে দেখি অমৃতকে দেখি সেইখানেই আমাদের আনন্দ । এই অসীমই সত্য—র্তাকে দেখাই সত্যকে দেখা। যেখানে তা না দেখবে সেই খানেই বুঝতে হবে আমাদের নিজের জড়তা মূঢ়তা অভ্যাল ও সংস্কারের দ্বারা আমরা সত্যকে অবরুদ্ধ করেছি, সেইজন্তে তাতে আমরা আনন্দ পাচ্ছি নে। বৈজ্ঞানিক বল, দার্শনিক বল, কবি বল, তাদের কাজই মাহুষের এই সমস্ত মৃত ও