পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ፃ8 ब्रयौठा-ब्रक्रमांबलौ ম্পর্শের দ্বারা মানের জল কেবল তার দেহের মলিনতা নয়, তার চিত্তেরও মোহগ্রলেপ মার্জন করে দিচ্ছে। অগ্নি জল মাটি অল্প প্রভৃতি সামগ্রীর অনন্ত রহস্ত পাছে অভ্যাসের দ্বারা আমাদের কাছে একেবারে মলিন হয়ে যায় এই জন্তে প্রত্যহই নানা কর্মে নানা অনুষ্ঠানে তাদের পবিত্রতা আমাদের স্মরণ করবার বিধি আছে। ষে-লোক চেতনভাবে তাই স্মরণ করতে পারে, তাদের সঙ্গে যোগে ভূমার সঙ্গে আমাদের ৰোগ এ-কথা বার বোধশক্তি স্বীকার করতে পারে সে-লোক খুব একটি মহং সিদ্ধি লাভ করেছে । জানের জলকে আহারের অন্নকে শ্রদ্ধা করবার যে শিক্ষা সে মূঢ়তার শিক্ষা নয় তাতে জড়ত্বের প্রশ্রয় হয় না ; কারণ, এই সমস্ত অভ্যস্ত সামগ্রীকে তুচ্ছ করাই হচ্ছে জড়ত, তার মধ্যেও চিত্তের উদ্বোধন এ কেবল চৈতন্তের বিশেষ বিকাশেই সম্ভবপর। অবশু, ষে-ব্যক্তি মূঢ়, সত্যকে গ্রহণ করতে যার প্রকৃতিতে স্থূল বাধা আছে, সমস্ত সাধনাকেই সে বিকৃত করে এবং লক্ষ্যকে সে কেবলই ভুল জায়গায় স্থাপন করতে থাকে এ-কথা বলাই বাহুল্য । so বহুকোটি লোক, প্রায় একটি সমগ্র জাতি, মৎস্ত মাংস আহার একেবারে পরিত্যাগ করেছে—পৃথিবীতে কোথাও এর তুলনা পাওয়া যায় না। মানুষের মধ্যে এমন জাতি দেখি নে যে আমিষ আহার না করে। ভারতবর্ষ এই ষে আমিষ পরিত্যাগ করেছে সে কুচ্ছ ব্ৰত সাধনের জন্তে নয়, নিজের শরীরের পীড়া দিয়ে কোনো শাস্থোপদিষ্ট পুণ্যলাভের জন্তে নয়। তার একমাত্র উদ্দেশু, জীবের প্রতি হিংসা ত্যাগ করা। এই হিংসা ত্যাগ না করলে জীবের সঙ্গে জীবের যোগসামঞ্জস্ত নষ্ট হয়। প্রাণীকে যদি আমরা খেয়ে ফেলবার, পেট ভরাবার জিনিস বলে দেখি তবে কখনোই তাকে সত্যরূপে দেখতে পারি নে। তবে প্রাণ জিনিসটাকে এতই তুচ্ছ করে দেখা অভ্যন্ত হয়ে যায় যে, কেবল আহারের জন্ত নয়, শুদ্ধমাত্র প্রাণিহত্যা করাই আমোদের অঙ্গ হয়ে ওঠে। এবং নিদারুণ অহৈতুকী হিংসাকে জলে স্থলে আকাশে গুহায় গহবরে দেশে বিদেশে মানুষ ব্যাপ্ত করে দিতে থাকে। ᏗᎨ এই যোগভ্ৰষ্টত, এই বোধশক্তির অসাড়তা থেকে ভারতবর্ব মানুষকে রক্ষা করবার জন্তে চেষ্টা করেছে। মাহুষের জ্ঞান বর্বরতা থেকে অনেক দূরে অগ্রসর হয়েছে তার একটি প্রধান লক্ষণ কী ? না, মানুষ বিজ্ঞানের সাহায্যে জগতের সর্বত্রই নিয়মকে দেখতে পাচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তা না দেখতে পাচ্ছিল ততক্ষণ পর্যন্ত তার জ্ঞানের সম্পূর্ণ সার্থকতা ছিল না।