পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাস্তিনিকেতন 8bre এই আশ্রম যখন প্রস্তত হতেছিল, বৃক্ষগুলি যখন ধীরে ধীরে আলোর দিকে মাখা তুলে ধরছিল, তখনও নূতন যুগের কোনোই সংবাদ এসে পৃথিবীতে পৌছোয় নি । অজ্ঞাতসারেই আশ্রমের ঋষি এই যুগের জন্ত আশ্রমের রচনাকার্ষে নিযুক্ত ছিলেন ; তখনও বিশ্বমন্দিরের দ্বার উদঘাটিত হয় নি, শঙ্খ ধ্বনিত হয়ে ওঠে নি। বিংশ শতাব্দীর জন্ত বিশ্ব-দেবতা গোপনে গোপনে কি ষে এক বিপুল আয়োজন করছিলেন, তার লেশমাত্রও আমরা জানতুম না। আজ সহসা মন্দিরের দ্বার উদঘাটিত হল—আমাদের কী পরম সৌভাগ্য। আজ বিশ্বদেবতাকে দর্শন করতেই হবে, অন্ধ হয়ে ফিরে গেলে কিছুতেই চলবে না। আজ প্রকাও উৎসব ; এই উৎসব একদিনের নয়, ছ দিনের নয়—শতাব্দী-ব্যাপী উৎসব । এই উৎসব কোনো বিশেষ স্থানের নয় কোনো বিশেষ জাতির নয়। এই উৎসব সমগ্র মানব-জাতির জগৎ-জোড়া উৎসব। এস আমরা সকলে একত্ৰ হই, বাহির হয়ে পড়ি । দেশে কোনো রাজার যখন আগমন হয় তাকে দেখবার জন্ত যখন পথে বাহির হয়ে আসি তখন মলিন জীর্ণ বস্ত্রকে ত্যাগ করতে হয়, তখন নবীন বস্ত্রে দেহকে সজ্জিত করি। আজ দেশের রাজা নন সমগ্র জগতের রাজা এসে সম্মুখে দাড়িয়েছেন। নত করে উদ্ধত মস্তক। দূর করে সমস্ত বর্ষের সঞ্চিত আবর্জনা । মনকে শুভ্র করে তোলে। শাস্ত হও, পবিত্র হও। তার চরণে প্ৰণাম করে গৃহে ফেরো। তিনি তোমাদের শিরে আশীৰ্বাদ ঢেলে দিন—মঙ্গল করুন, মঙ্গল করুন, মঙ্গল করুন ।