পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

gurbo ब्रदौटण-ज्ञछनांबलौ একদিকে এই পুরাতন আকাশ, পুরাতন আলোক এবং তরুলতার মধ্যে পুরাতন জীবনবিকাশের নিত্য নূতনত, আর-একদিকে মানবচিত্তের মৃত্যুহীন পুরাতন বাণী, এই দুইকে এক করে নিয়ে এই শাস্তিনিকেতনের আশ্রম। বিশ্বপ্রকৃতি এবং মানবচিত্ত, এই দুইকে এক করে মিলিয়ে আছেন যিনি তাকে এই দুয়েরই মধ্যে একরূপে জানবার যে ধ্যানমন্ত্র, সেই মন্ত্রটিকেই ভারতবর্ষ তার সমস্ত পবিত্র শাস্ত্রের সার মন্ত্র বলে বরণ করেছে। সেই মন্ত্রটিই গায়ন্ত্রী, ওঁ তৃভূবঃ স্ব: তৎসবিতৃবরেণ্যং ভর্গোদেবস্ত ধীমছি, ধিয়োযোনঃ প্রচোদয়াং । একদিকে ভূলোক অন্তরীক্ষ জ্যোতিষ্কলোক, আর একদিকে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি, আমাদের চেতনা—এই দুইকেই যার এক শাস্তি বিকীর্ণ করছে, এক দুইকেই ধার এক আনন্দ যুক্ত করছে—তাকে, তার এই শক্তিকে বিশ্বের মধ্যে এবং আপনার বুদ্ধির মধ্যে ধ্যান করে উপলব্ধি করবার মন্ত্র হচ্ছে এই গায়ত্রী। র্যারা মহর্ষির আত্মজীবনী পড়েছেন তারা সকলেই জানেন তিনি তার দীক্ষার দিনে এই গায়ত্ৰীমন্ত্রকেই বিশেষ করে তার উপাসনার মন্ত্ররূপে গ্রহণ করেছিলেন । র্তার এই দীক্ষার মন্ত্রটিই শাস্তিনিকেতনের আশ্রমকে আকার দান করছে—এই নিতৃতে মানুষের চিত্তকে প্রকৃতির প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত করে, বরেণ্যং ভর্গ, সেই বরণীয় তেজকে ধ্যানগম্য করে তুলছে। এই গায়ত্রী মন্ত্রটি আমাদের দেশের অনেকেরই জপের মন্ত্ৰ—কিন্তু এই মন্ত্রটি মহৰ্ষির ছিল জীবনের মন্ত্র । এই মন্ত্রটিকে তিনি তার জীবনের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন এবং তার সমস্ত জীবনের ভিতর থেকে প্রকাশ করেছিলেন । এই মন্ত্রটিকে তিনি যে গ্রহণ করেছিলেন এবং রক্ষা করেছিলেন লোকাচারের অতুসরণ তার কারণ নয়। হাস যেমন স্বভাবতই জলকে আশ্রয় করে তিনি তেমনি স্বভাবতই এই মন্ত্রটিকে অবলম্বন করেছিলেন । শিশু যেমন মাতৃস্তম্ভের জন্ত কেঁদে ওঠে, তখন তাকে আর কিছু দিয়েই থামিয়ে রাখা যায় না তেমনি মহৰ্ষির হৃদয় একদিন তার যৌবনারম্ভে কী অসঙ্ক ব্যাকুলতায় ক্ৰন্দন করে উঠেছিল সে-কথা আপনার সকলেই জানেন । সে ক্ৰন্দন কিসের ? চারদিকে তিনি কোন জিনিসটি কোনোমতেই খুজে পাচ্ছিলেন না? যখন আকাশের আলো তার চোখে কালো হয়ে উঠেছিল, যখন র্তার পিতৃগৃহের অতুল ঐশ্বর্ধের আয়োজন এবং মানসন্ত্রমের গৌরব তার মনকে কোনোমতেই শাস্তি দিচ্ছিল না, তখন তার যে কী প্রয়োজন, কী হলে তার হারের স্থা মেটে তা তিনি নিজেই বুঝতে পারছিলেন না। H *... . . .