পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা আমার রচনার আবর্জিত অংশ অনেক দিন আমি প্রচ্ছন্ন রেখেছিলুম। তার অধিকাংশই অসম্পূর্ণ, অপরিপক্ক। এক সময়ে বালক ছিলুম, তখনকার রচনার স্বাভাবিক অপরিণতি দোষের নয়, কিন্তু সাহিত্যসভায় তাকে প্রকাশ্যতা দিলে তাকে লজ্জা দেওয়া হয় । তার লজ্জার কারণ আর কিছু নয়, তার মধ্যে যে একটা বয়স্কের অভিমান দেখা দেয় সেটা হাস্যকর, কেননা সেটা কৃত্ৰিম । স্বাভাবিক হবার শক্তি পরিণত বয়সের, সে বয়সে ভুলচুক থাকতে পারে নানা রকমের, কিন্তু অক্ষম অনুকরণের দ্বারা নিজেকে পরের মুখোশে হাস্যকর করে তোলা তার ধর্মনিয়- অন্তত আমি তাই অনুভব করি। যে বয়স থেকে নিজের পরিচয় আমি নিজের স্বভাবেই প্রতিষ্ঠিত উপলব্ধি করেছি। সেই বয়স থেকেই আমি সাহিত্যিক দায়িত্ব নিজের বলে স্বীকার করে নিয়ে সাধারণের বিচারসভায় আত্মসমৰ্পণ করতে আজ পর্যন্ত প্ৰস্তুত ছিলাম । প্রকৃতির সৃষ্টিতে যা ত্যাজ্য, প্রবল তার সম্মার্জনী । মানুষের রচনার জন্যেও আছে সম্মার্জনী, সেটা বেঁটিয়ে ফিরিয়েও আনে। তার প্রভাব মানতেই হবে । প্রকাশের পূর্ণতায় যা পৌঁছােয় নি তারও মূল্য আছে হয়তো, ইতিহাসে, মনােবিজ্ঞানে ; তাই সাহিত্যের অবজ্ঞা এড়িয়েও সে প্রকাশকের পাসপোর্ট পেয়ে থাকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর