পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- নয়নপালক স্থির, হাদয় পরান ধীর, শিরায় শিরায় রহে স্তৱন্ধ শোণিত । হৃদয়ে নাহিক জ্ঞান, পর্যানে নাহিক প্ৰাণ, চিন্তার নাহিক রেখা হািদয়ের পটে ! নয়নে কিছু না দেখে, শ্রবণে স্বর না ঠেকে, শোকের উচ্ছাস নাহি লাগে চিত্ততাটে ! সুদীর্ঘ নিশ্বাস ফেলি, সুধীরে নয়ন মেলি ক্ৰমে ক্রমে পিতা তার পাইলেন জ্ঞান ! সহসা সভয়প্ৰাণে দেখি চারিদিক পানে আবার ফেলিল শ্বাস ব্যাকুলপারান— কী যেন হারায়ে গেছে, কী যেন আছে না আছে, শোকে ভয়ে ধীরে ধীরে মুদিল নয়ন

  • কোথা মা কমলা মোর কোথা মা জননী !” চমকি উঠিল যেন নীরব রজনী ! চমকি উঠিল যেন নীরব অবনী । উমিহীন নদী যথা ঘুমায় নীরবেসহসা করণক্ষেপে "সহসা উঠে রে কেঁপে, সহসা জাগিয়া উঠে চলউমি সবে ! কমলার চিত্তব্যাপী সহসা উঠিল কঁাপি

পর্যানে পরান এলো হািদয়ে হাদয় ! স্তবধ শোণিতরাশি আস্ফালিল হাদে আসি, আবার হইল চিন্তা হািদয়ে উদয় ! আবার সকল কথা হইল স্মরণ ! আছেন জনক তঁতার, হেরিল নয়ন । শুনিল কাতর স্বরে ডাকিছে জনক, “ কোথা মা কমলা মোর কোথা মা জননী !” বিষাদে ষোড়শী বালা চমকি আমনি (নেত্ৰে অশ্রদ্ধারা ঝরে) কহিল কাতর স্বরে “কোন পিতা ! কোন পিতা ! এই-যে রয়েছি হেতা”- বিষাদে নাহিক আর সরিল বচন ! এক দৃষ্টে স্থিরনেত্রে রহিল চাহিয়া ! r নেত্ৰপ্ৰান্তে দরদরে, শোক-অশ্রাবারি করে, বিষাদে সম্ভাপে শোকে আলোড়িত হিয়া ! গভীর।নিশ্বাসক্ষেপে হৃদয় উঠিল কেঁপে, ফাটিয়া বা যায় যেন শোণিত-আধার ! ۔ 9\8