পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6268 রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী স্বাগত আমি যদি হইতাম হাস্যোত্রাসময় নিবরিণী, বরষার নবোচাছুসময় ! হরষেতে হেসে হেসে কবির কাছোতে এসে ডুবাতেম ভালোবেসে আদরে আদরে ! যদি কভু দেখিতাম মুহুর্তের তরে বিষাদ ছাইছে পাখা কবির অধরে, হাসিয়া কত-না হাসি ঢালিয়া সংগীত রাশি মৃদু অভিমান করি।” মৃদু রোষাভরেমৃদু হেসে মৃদু কেঁদে বাহুতে বাহুতে বেঁধে দিতেম বিষাদ ভার সব দূর করে ! কিন্তু আমি অভাগিনী ছেলেবেলা হতে এ গভীর মুখে মম অন্ধকার ছায়া-সম রহিয়াছি সতত কবির সাথে সাথে ! আমি লতাগুরুতভার মেলি শাখা অন্ধকার হেন ঘন আলিঙ্গনে করেছি বেষ্টন, উন্নত মাথায় তার পড়িতে দিই না। আর চাদের হাসির আলো, রবির কিরণ ! হা মুরলা, মুরলা রে, এমনি করেই হা রে হারালি- হারালি বুঝি ভালোবাসা-ধন ! বুক, ফেটে যা রে, অশ্রদ্ধ করা বরিষণকবি তোর অশ্রদ্ধার দেখিতে পাবে না। আর, যে কিরণে আছে ডুবি তাহার নয়ন ! দুর্বল- দুর্বল হৃদি ! আবার ! আবার ! আবার ফেলিস তুই অশ্রুবারিধারা ? পাষাণে পাষাণে গাথা কে যেন হানিছে মাথা, কে যেন উন্মাদ-সম করে। হাহাকারসমস্ত হৃদয়ময় ছুটিয়া আমার ! কবি যদি সুখী হয় কি ভাবনা আর ! আহা কবি, সুখী হও ! তুমি কবি সুখী হও ! আমি কে সামান্য নারী ?- কি দুঃখ আমার ! তুমি যদি সুখী হও কি দুঃখ আমার ? ও চাদের কলঙ্কও হতে নাহি পারি এত ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্র তুচ্ছ আমি নারী !