পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

KeOS রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী কেমন ? এখন তোর ঘুচেছে তো ভ্ৰম ? এই তো নলিনী তোর ? প্ৰাণের দেবতা তোর ? ছি ছি রে, কোথায় গিয়ে ঢাকিবি শরাম ? নীচে হতে নীচ অতি- ইন হতে হীনপথের ধুলার চেয়ে আসার মলিন । এই এক ধুলিমুষ্টি কিনিয়া রাখিতে সমস্ত জগৎ তোর চেয়েছিলি দিতে ! রাজপথে মনের দোকান খুলিয়াছেরঙ মাখাইয়া কত কুঁটা মন শত শত সাজাইয়া রেখেছে সে দুয়ারের কাছে, যে-কোনো পথিক আসে ডাকি তারে লয় পাশে, হৃদয়ের ব্যবসায় করে সে রমণীআমারেও প্ৰতারণা করেছে এমনি ! যে মন কিনিয়াছিনু কিছুই সে নয়, রঙ-করা দুটা হাসি দুটা কথা-ময় ! প্ৰতি পিপাসিত আঁখি যে হাসি লুটিছে, প্ৰতি শ্রবণের কাছে যে কথা ফুটিছে, যে হাসির নাই বাস, নাই অন্তঃপুর, চরণে যে বেঁধে রাখে মুখর নৃপুর, যে হাসি দিবস রাতি ভিক্ষার অঞ্জলি পাতি প্ৰতি পথিকের কাছে নাচিয়া বেড়ায়— অনিল রে !! তারি তরে কেঁদেছিল হায় ! যে কথা, পথের ধারে পঙ্কের মতন, জড়াইয়া ধরে প্রতি পান্থের চরণ, সেই একটি কথা। —তরে হদয়, আমার, সেই মহা পাপিষ্ঠার তুলনা কোথায় ? শরীর তো কিছু নয়, সে তো শুধু ধূলাধুলির মুষ্টির সাথে হয় তার তুলাসমস্ত জগৎ তুল্য হৃদয়ের পাশে সাধ করে হেন হদি যেজন বিনাশে, তোর মাথা পরশিল তাহারি চরণ ! তারেই দেবতা বলে করিলি বরণ ! তারি পদতলে তুই সঁপিলি হৃদয়তোর হৃদি- যার কাছে কিছুই সে নয় ! শতেক সহস্ৰ হেন নলিনী আসুক কেন ধুলিও বিধাতা, এ সৃষ্টি তব সব বিড়ম্বনা, সত্য বলে যাহা কিছু পরশিতে গেছি। পিছু ছুয়েছি। যেমনি আর কিছুই রহে না !