পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভগ্নহৃদয় নদীরে জাগায়ে দিস লতারে রাগায়ে দিস চুপিচুপি করিয়া চুম্বন ! তোর নহে সুখের জীবন ! যেথা দিয়া তুই যাস পদতলে চারি পাশ ফুলেরা খুলিয়া দেয় প্ৰাণ ! বুকের উপর দিয়া যাস 'তুই মাড়াইয়া, কিছু না করিস অবধান । শুনিতে মুখের কথা আকুল হইয়া লতা কত তোরে সাধাসাধি করেদুটা কথা শুনিলি বা, দুটা কথা বলিলি বা, চলে যাস দূর দূরান্তরে ! পাখিরা খুলিয়া প্ৰাণ করে তোর গুণগান, চারি দিকে উঠে প্ৰতিধবনি : বকুলের বালিকারা হইয়া আপন-হারা ঝারি পড়ে সুখেতে অমনি ! তবু রে বসন্ত সমীরণ, তোর নহে সুখের জীবন ! আছে যাশ, আছে মান, আছে শত মন প্ৰাণ--- শুধু এ সংসারে তোর নাই এক তিল দাড়াবার ঠাই ! তাই রে জোছনারাতে অথবা বসন্তপ্ৰাতে গ্যাস যাবে উকুলাসের গান, সে রাগিণী মনোমাঝে বিষাদের সুরে বাজে, হাহাকার করে তাহে প্ৰাণ ! শোন বলি বসন্তের বায়, হৃদয়ের লতাকুঞ্জে আয়শ্যামল বাহুর ডোরে বাধিয়া রাখিব তোরে ছোটো সেই কুঞ্জটির ছায় ? তুই সেথা র’স যদি তবে সেথা নিরবধি মধুর। বসন্ত জেগে রবে, প্ৰতি দিন শত শত নব নব ফুল যত ফুটিবেক, তোরি সব হবে । তোরি নাম ডাকি ডাকি একটি গাহিবে পাখি, বাহিরে যাবে না। তার স্বর ! সে কুঞ্জেতে অতি মৃদু মানিক ফুটাবে শুধু বাহিরের মধ্যাহের কর । নিভূত নিকুঞ্জছায় হেলিয়া ফুলের গায় শুনিয়া পাখির মৃদু গান লতার-হৃদয়ে-হারা সুখে-অচেতন-পারা ঘুমায়ে কাটায়ে দিবি প্ৰাণ ! W OGł